দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সাধারণভাবে দেখা যায়, বয়স ৮০ পেরুলেই অধিকাংশ মানুষ নিজেকে ঘরের মধ্যে বন্দী করে ফেলেন, সেখানে ১০৪ বছর বয়সী মানুষের আকাশে ভেসে বেড়ানোর ঘটনা অনেকটা অবাস্তব মনে হলে বাস্তবে তাই ঘটেছে!
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে গত ১ অক্টোবর ডরোথি হাফনার (১০৪) বুঝিয়ে দিয়েছেন, বয়স কোনো বিষয়ই নয়। মার্কিন সংবাদ সংস্থা এপির এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
ডরোথি সচরাচর ওয়াকারে ভর করেই হাঁটেন। তবে এবারই তিনি প্রথম স্কাইডাইভ (আকাশ থেকে ঝাঁপ) করছেন এমনটি কিন্তু নয়। ১০০ বছর বয়সেও তিনি প্রথমবারের মতো স্কাই ড্রাইভিং করেছিলেন। এবার মাত্র ৭ মিনিটে স্কাই ড্রাইভ শেষ করে শিকাগোতে মাটি স্পর্শ করার পর উপস্থিত সকলেই তাকে অভিবাদন জানাতে ছুটে আসেন। এই বিষয়ে ডরোথি বলেছেন, ‘বয়স শুধু একটি সংখ্যা মাত্র।’
ইতিপূর্বে গত বছরের মে মাসে সুইডেনের ১০৩ বছর বয়সী ইনগেগার্ড লারসন সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে স্কাই ড্রাইভ করার পর গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছিলেন। এখন ডরোথির নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তোলার চেষ্টা করছে শিকাগোর ওই স্কাই ড্রাইভ।
ডরোথি ওইদিন তার ওয়াকারকে পেছনে ফেলে ছোট্ট বিমান স্কাই ভ্যানে ওঠেন। সেখানে তিনি স্কাই ড্রাইভিংয়ের জন্য প্রস্তুতিও নেন। তারসঙ্গে উপস্থিত সবাই তাঁকে বেশ উৎসাহ দেন এই সময়। এবার তার সঙ্গে ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্যারাসুট অ্যাসোসিয়েশনের সনদধারী একজন প্রশিক্ষক। ৩ হাজার ৫০০ ফুট (৪ হাজার ১০০ মিটার) ওপর হতে তারা দু’জন ঝাঁপ দেন।
তবে এতেও থেমে থাকবেন না ডরোথি। আগামী ডিসেম্বরে তিনি ১০৫ বছরে পা দিচ্ছেন। তিনি নতুন কোন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে চান সে পরিকল্পনা সেরে ফেলেছেন। তিনি বলেেছেন, ‘এবার হট এয়ার বেলুনে চড়তে চাই আমি, আগে কখনও এই বেলুনে আমি চড়িনি।’
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org