বয়স ৩০ পেরোলেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বয়স ৩০ পেরোলেই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তবে কী কারণে? এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসই এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দিনে দিনে বাড়তে পারে। বয়স ৩০ পেরোলে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সকলেই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

ক্যান্সার শব্দটির সঙ্গে পরিচিত আমরা অনেকেই। তবে পরিচিত কেও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন শুনলেই পিঠের শিরদাঁড়া বেয়ে নীচের দিকে নামতে থাকে ঠাণ্ডা এক স্রোত। এই মারণরোগ মহামারির চেয়েও কোনও অংশে কম নয়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাসে এই রোগের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যেনো দিন দিন বাড়ছে। কয়েকটি কারণে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার থেকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন?

মুখের ক্যান্সার

Related Post

সাধারণ গুটখা, খৈনি, পানমশলা খাওয়ার অভ্যাসই ডেকে আনতে পারে এই মারণরোগের ঝুঁকি। অনেকেই জেনেবুঝেও এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন না। তাছাড়াও মদ্যপানের কারণে এবং হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)-এর সংক্রমণেও এই রোগটি বাসা বাঁধে শরীরে। মুখের ভিতর সাদা কিংবা লালচে ছোপ, মুখের ভিতরে কোনও ব্যথাহীন ফোলা অংশ, দীর্ঘদিন ধরে জিভ নাড়াতে এবং কথা বলতে অসুবিধে হওয়া মুখের ক্যান্সারের লক্ষণ।

স্তন ক্যান্সার

৩০ পেরোনো মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের হানা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক হয়ে উঠছে সাম্প্রতিক সময়। স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয়ের চাবিটি থাকে আক্রান্তের কাছে। শারীরিক কোনও পরিবর্তন চোখে পড়লে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। প্রথম থেকেই এই অসুখ নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। যেমন স্তনে মাংসপিণ্ড দেখা দেওয়া, স্তনবৃন্তের আশপাশে র‌্যাশ এবং চুলকানি, স্তনের সঙ্গে ঘাড় এবং কাঁধে ব্যথা, স্তনের আকার বদলে যাওয়াসহ এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো বিদ্যমান থাকে।

জরায়ুমুখ ক্যান্সার

মহিলাদের মধ্যে যেসব ক্যান্সার দেখা যায়, তারমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে সারভাইকাল ক্যান্সার বা জরায়ুমুখ ক্যান্সার রয়েছে দ্বিতীয়তম স্থানে। প্রতিবছর ভারতে গড়ে এক লক্ষেরও বেশি নারী এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এইচপিভি-র হানাতে এই মারণরোগ বাসা বাঁধে শরীরের মধ্যে। তবে এই ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করা ছাড়াও জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অপর একটি প্রধান কারণ হলো অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক। ঋতুচক্রের নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ, যৌনমিলনের সময় প্রবল যন্ত্রণার সঙ্গে রক্তপাত, তলপেট, কোমরে দীর্ঘদিন ব্যথা এই ক্যান্সারের প্রাথমিক উপসর্গ।

অণ্ডকোষের ক্যান্সার

পুরুষদের মধ্যে এই ক্যান্সারের বাড়-বাড়ন্ত দেখা যায় সাধারণ ৩০ হওয়ার পর। অণ্ডকোষের আকারে হঠাৎ পরিবর্তন বা অবাঞ্ছিত টিউমার কিংবা ফোলা অংশ দেখলে সতর্ক হতে হবে। যদিও চিকিৎসকরা বলেছেন, অণ্ডকোষের ক্যান্সার যে কোনও বয়সেও হতে পারে। তাই সতর্ক থাকাটা জরুরি।

মেলানোমা ক্যান্সার

সূর্যের অতিবেগনি রশ্মি থেকে ত্বকে এই ধরনের ক্যান্সার হওয়ার ভয়ও বেশি। ছাতা ব্যবহারে অনীহা প্রকাশ, সানস্ক্রিন ব্যবহার না করার অভ্যাসেও এই ক্যান্সার হতে পারে। ত্বকের উপর সন্দেহজনকভাবে আঁচিল, তিল গজাতে দেখলে সাবধান হতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on অক্টোবর ৯, ২০২৩ 4:42 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

গাজা এবং লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৪৫

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ড এবং লেবাননজুড়ে ভয়াবহ হামলা চলমান রেখেছে…

% দিন আগে

এখন থেকে বড় পর্দায় দেখা যাবে রাতের স্বপ্ন!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…

% দিন আগে

রাজবাড়ী বড় মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে