দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা এমন বেড়ে গেছে যে, কুয়াশা পড়ার মতো শীত না এলেও সকালের দিকে ধোঁয়ার আস্তরণ দেখা যাচ্ছে ঠিক সে রকমই। বায়ুদূষণের ভয়ে বাইরে হাঁটতে বা দৌড়ানোর জন্য শরীরচর্চার বিকল্প উপায় কী হতে পারে?
শরীরচর্চা বলতে সকালে বাড়ির চারপাশে এক পাক দৌড়ানো ও বিকেলে নিয়ম করে পার্কে জগিং করা। ছকে বাঁধা এই নিয়ম মেনে খুব একটা ক্ষতিই হয়নি। সম্প্রতি বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা এমন বেড়ে গেছে যে, কুয়াশা পড়ার মতো শীত না এলেও সকালের দিকে ধোঁয়ার আস্তরণ ঠিক সেরকমই দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, অল্প হাঁটলেই হাঁপিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। সামনে আরও বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়বে, তখন বাইরে বের হওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। চিকিৎসকরা বলেছেন, বয়স্কদের জন্য তা যথেষ্ট ঝুঁকি বটে। তবে বাইরে বের হতে পারছেন না বলে শরীরচর্চা করা বন্ধ করে দেওয়াও কাজের কাজ হবে না। ঘরের মধ্যে দৌড়াতে না পারলেও হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর মতোই ফল মেলে এমন ব্যায়াম করা যেতে পারে।
শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে পারে
ঘরের বাইরে শরীরচর্চা করার উদ্দেশ্য হলো শরীরে বেশি মাত্রায় অক্সিজেন যোগ করা। তবে দূষিত বাতাসের মধ্যে হাঁটাহাটি কিংবা দৌড়ালে অক্সিজেনের পরিবর্তে ফুসফুসে ক্ষতিকর দূষিত পদার্থও জমা হবে। যে কারণে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা এই সময় বেড়েও যেতে পারে। সিওপিডির মতো সমস্যা সাংঘাতিক আকার ধারণ করতে পারে।
শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণ কমতে পারে
শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মানেই হলো শরীরে পর্যাপ্ত মাত্রায় অক্সিজেন পৌঁছাতে পারছে না। যে কারণে ফুসফুসের উপর চাপ পড়ছে। অক্সিমিটারে মাপলে দেখা যাবে সাধারণ রক্তে যে পরিমাণ অক্সিজেন থাকার কথা, তা কিন্তু নেই।
মাথা ধরার সমস্যা বাড়তে পারে
এমনিতেও রোদ লাগলে মাইগ্রেনের সমস্যা হতে পারে অনেকের। ঠাণ্ডা-গরমেও মাথা ধরার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকলেও মাথা ধরতে পারে।
চোখ লাল হয়ে ফুলেও যেতে পারে
বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকলে চোখের উপরে প্রভাব পড়ে সবচেয়ে বেশি। অনেকেরই চোখ লাল হয়ে ফুলে যায়। চোখে অস্বস্তি হতে পারে, চোখ থেকে অনর্গল পানি পড়তে থাকে।
অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বাড়তে পারে
শীতকালে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণই হলো এই বায়ুদূষণ। এমনিতেই এই সময় বাতাসে ধূলিকণা, ভাইরাসের পরিমাণ অনেকটা বেড়ে যায়। তাই শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে তা সহজেই শরীরে প্রবেশ করতে পারে। যে কারণে হাঁচি, সর্দি, কাশির পাশাপাশি ত্বকে র্যাশ, চুলকানির মতো সমস্যাগুলো আরও বেড়ে যেতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org