দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবরুদ্ধ গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধ বিরতির দাবি তুলে চিঠিতে সই করেছেন মার্কিন সহায়তা সংস্থা ইউএসএআইডির এক হাজার কর্মী।
সেইসঙ্গে ইসরায়েলের সমর্থনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র সহায়তা এবং ওয়াশিংটনের যুদ্ধ নীতির তীব্র সমালোচনাও করেন এইসব কর্মী। চিঠিতে তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে মার্কিন সমর্থনের বিরুদ্ধেও নিন্দা জানানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে ইউএসএইডের দেশীয় এবং বিদেশি শাখায় চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। তারপর বুধবার (৮ নভেম্বর) এক হাজার কর্মীর সই করা চিঠিটি পায় ওই সংস্থাটি।
চিঠিতে তারা গাজায় জরুরি মানবিক সহায়তার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, ‘সংস্থাটি অনেক বছর ধরে জরুরি সেবার পাশাপাশি যুদ্ধ বিরতির জন্য অক্লান্ত চেষ্টা করে আসছে। সেইক্ষেত্রে আমাদের সবাইকেই মনে রাখতে হবে যে, কোন মানুষ যেনো মানবিক সহায়তা এবং জীবন রক্ষাকারী সাহায্য থেকে বঞ্চিত না হয়। গত ৭ অক্টোবর হতে গাজার ওপর ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান এবং নির্বিচারে বোমা হামলায় মার্কিন সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক উন্নয়ন এবং মানবিক সহায়তার বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’
ইতিপূর্বে গত ২০ অক্টোবর অস্কার বিজয়ী অভিনেতা জোয়াকুইন ফিনিক্স এবং কমেডিয়ান জন স্টেওয়ার্টসহ ৬০ জন হলিউড তারকা লিখিত এক বার্তায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে গাজায় যুদ্ধ বিরতির দাবিও জানান।
চিঠিতে তারা লিখেন যে, ‘আপনার প্রশাসন এবং সব বিশ্বনেতাদেরকে পবিত্র এই ভূমির সব মানুষের জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অনুরোধও করছি। সময় নষ্ট না করে দ্রুত যুদ্ধ বিরতির ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। গাজায় বোমা হামলা বন্ধ করুন এবং বন্দীদের নিরাপদ মুক্তির ব্যবস্থাও করুন। এই ঘটনায় আমরা নীরব ছিলাম। তবে এখন উপলব্ধি করছি যে, এই বার্তা আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও দিতে চাই না।’
অপরদিকে ঘরবাড়ি ফেলে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অবরুদ্ধ এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত গাজা উপত্যকা ছেড়েছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নাগরিক। যারমধ্যে উপত্যকাটির প্রাণকেন্দ্র গাজা শহর ইতিমধ্যেই ঘিরে ফেলেছে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে উপত্যকাটির শাসকগোষ্ঠী এবং সশস্ত্র হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাদের তীব্র সংঘর্ষও চলছে। এই লড়াইয়ের মধ্যে গাজা শহর ছেড়ে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে চলে যাচ্ছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। তথ্যসূত্র : আলজাজিরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org