দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সামনেই নির্বাচন, রাজনৈতিক দলের ফেসবুক প্রচারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কিংবা এআই-সংবলিত বিজ্ঞাপনী পণ্যকে বাগে আনতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে যাচ্ছে মেটা। কারণ হলো প্রচার যেনো অপপ্রচার না হয়ে যায়!
বিশ্বের অনেক দেশের জন্যই ২০২৪ সালটা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বছরে বিশ্বের বেশ কিছু বড় দেশের নির্বাচন। সেই তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ-ভারত, তেমনই রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকোর মতো দেশ। আর এই কথাটি সবাই এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমানে অন্যতম বড় একটি অস্ত্র। তবে নির্বাচনকে মাথায় রেখে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মালিক সংস্থা মেটা তাদের পলিসিতে জরুরিভিত্তিতে কিছু পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে।
ফেসবুকে নির্বাচনের সময় অনেক ভুল তথ্য ছড়ানোর অভিযোগও রয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা বারবার সতর্কবাণীও দিয়েছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আগমনের কারণে সেই আশঙ্কা আরও যেনো বেড়েছে। আগের সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞাপন হিসেবে প্রচারিত তথ্যের সত্যতা নির্ধারণে ফেসবুক সচেষ্ট হলেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে ফেসবুকের সুনির্দিষ্ট নিয়মকানুনই ছিল না।
একটি ব্লগ পোস্টে মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ বলেছেন যে, ‘অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন যেহেতু সামনে, আমরা ঠিক করেছি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নীতি ও সুরক্ষা ব্যবস্থাগুলো আপডেট করা হবে এবং ২০২৪ সালে তা প্রযোজ্যও হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘নাইজিরিয়া, থাইল্যান্ড, তুরস্ক ও আর্জেন্টিনায় সাম্প্রতিকতম বড় নির্বাচন এবং সামনের বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য এবং আঞ্চলিক নির্বাচনগুলো চলাকালীন আমাদের প্ল্যাটফর্মের অপব্যবহার বন্ধ করতে চাইছি।’
মেটা যে স্থানে বেশি ভয় পাচ্ছে, আর তা হলো রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ব্যবহার। সে কারণে ২০২৪ সালের প্রথম থেকেই বিজ্ঞাপনদাতাদের জানাতে হবে যে, তারা কোনও রাজনৈতিক (পলিটিক্যাল) কিংবা সামাজিক (সোশ্যাল) বিষয় নিয়ে বিজ্ঞাপন তৈরি করার সময় এআই কিংবা অন্যান্য ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে কি-না। এটি মূলত তখনই প্রযোজ্য হবে, যখন বিজ্ঞাপনটিতে একটি ফটোরিয়ালিস্টিক ইমেজ কিংবা ভিডিও বা বাস্তবসম্মত সাউন্ডিং অডিও থাকে। বিজ্ঞাপনদাতাকে এই বিষয়টি পরিষ্কার করে দিতে হবে, সেই ছবি, ভিডিও কিংবা অডিও সত্যিকারের। এআই -এর কারসাজিতে কনটেন্টে কোনও কারিকুরিও করা হয়নি, সেটিও প্রমাণ করতে হবে বিজ্ঞাপনদাতাকে।
মেটা জানিয়েছে যে, সামাজিক বিষয়াদি, গৃহায়ণ, কর্মসংস্থান, ঋণ, নির্বাচন, রাজনীতি, স্বাস্থ্য এবং আর্থিক সেবা খাতের বিজ্ঞাপনদাতারা অ্যাডস ম্যানেজার থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত বিজ্ঞাপন তৈরির সফটওয়্যার ব্যবহার করতেও পারবে না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org