দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে কোনো ত্রাণই ঢুকছে না গাজায়। খাবারের জন্য হাহাকার পড়ে গেছে। খাবার নেই, খাবার পানি নেই এক মহা বিপর্যয় নেমে এসেছে গাজাবাসীদের।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে জানিয়েছে যে, অবরুদ্ধ গাজার অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা ক্ষুধার যন্ত্রণা ভোগ করছেন। প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই প্রতিদিন খেতে পান না। সংস্থাটি জানিয়েছে যে, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তা সামাল দেওয়াটা বাস্তবেও সম্ভব হবে না। ক্ষুধার যন্ত্রণা এতো বেশি যে, মানুষ ধ্বংসস্তূপের মধ্যে তার স্বজনের লাশটা পর্যন্তও খুঁজতে যায় না। তারা বরং খাবার সংগ্রহকেই বড় কাজ বলে মনে করছে।
গাজায় ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের সহায়তায় নিয়োজিত জাতিসংঘের কর্মকর্তা থমাস হোয়াইট গত মাসে বলেছিলেন যে, অবরুদ্ধ ছিটমহলের বেশির ভাগ বাসিন্দা কেবল দুই টুকরো রুটি খেয়ে জীবন-যাপন করছেন। কূটনীতিকদের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় হোয়াইট বলেছেন যে, ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য গাজায় জাতিসংঘের রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্ক এজেন্সি প্রায় ৮৯টি বেকারিকেও সহায়তা করছে। তবে মানুষ এখন রুটির চেয়ে বেশি পানির জন্যই মরিয়া হয়ে উঠেছে। গাজায় খাবার এবং পানির সংকট দিন দিন আরও তীব্রতর হয়ে উঠছে।
গত সপ্তাহে মধ্য গাজায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সংস্থা পরিচালিত একটি গুদামেও হাজার হাজার ফিলিস্তিনি হুমড়ি খেয়ে পড়েন খাদ্যের সন্ধানে।
মৃত্যু ও ধ্বংস: গাজায় প্রায় ১৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। যারমধ্যে ৭ হাজারের বেশি শিশু। আহত হয়েছেন ৪৬ হাজারের বেশি গাজাবাসী।
ইসরায়েলে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর গাজার উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকের শহর বেইত লাহিয়া ও বেইত হানুন প্রথম বিমান হামলার শিকার হয়। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স-আইডিএফ বলছে যে, এই এলাকায় হামাস আত্মগোপনেই ছিল।
গাজার কেন্দ্রে অবস্থিত নুসেইরাত শরণার্থী শিবির যুদ্ধবিরতির প্রথম দিকে কয়েক বার হামলার শিকার হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, এই শিবিরে অন্তত ৮৫ হাজার মানুষ বসবাস করতো।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org