হরমোনের হেরফেরে নজর রাখতে হবে ডায়েটে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যদি শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত ঘটে তাহলে আপনাকে ডায়েটে নজর দিতে হবে। খাদ্যতালিকা বদলে ফেললে কিছুটা সুরাহা পেতেই পারেন।

হরমোন নিয়ে আলোচনা হলে প্রথমেই উঠে আসে ইনসুলিন। কারণ পুরো বিশ্বেই দিনকে দিন ডায়াবেটিসসের রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। যাদের মধ্যে আবার অনেকেই ইনসুলিনের উপরে নির্ভরশীল। তবে ভারতের পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী বলেছেন, “ডায়াবেটিস রোগীদের শরীরে ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স কতোটা তৈরি হয়েছে, তা আগেই দেখা জরুরি। মনে রাখতে হবে যে, মধুমেহ রোগে প্রথমেই কিন্তু ওষুধ শুরু হয় না। প্রথমে খাদ্যতালিকায় বদল এনে রক্তে গ্লুকোজ়ের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়ে থাকে। এমন অনেক রোগী রয়েছেন, যারা কেবল খাদ্যতালিকায় বদল এনেই ব্লাড গ্লুকোজ় লেভেল কমাতে পারেন। তবে এর জন্য কী খাবেন বা কখন খাবেন তা গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।”

ইনসুলিন ম্যানেজমেন্ট জরুরি

Related Post

পুষ্টিবিদ কোয়েল পালচৌধুরী বলেছেন যে, একদিনের ফাস্টিং, পিপি দিয়ে গ্লুকোজ় লেভেল কখনও বোঝা যায় না। সে কারণে এইচবিএওয়ানসি করতে দেওয়া হয়। “এছাড়াও বিভিন্ন রকমের ইনসুলিন রয়েছে। কিছু ইনসুলিন আবার রাতে দিতে হয়, যেমন- লং অ্যাক্টিং ইনসুলিন। আবার মিক্সড ইনসুলিনও হয়, যেটা খাবার খাওয়ার ১৫ মিনিট আগে দেওয়া হয়ে থাকে। এটিই সাধারণত রোগীকে দেওয়া হয়। তাছাড়াও র‌্যাপিড অ্যাক্টিং, ইন্টারমিডিয়েট অ্যাক্টিং ইনসুলিনও রয়েছে। তাই ইনসুলিন ম্যানেজমেন্টটাও আপনাকে জানতে হবে। কারণ হলো রোগী যদি ইনসুলিন নেন, তাহলে তাকে পরিমাণ মতো খাবার খেতে হবে। সেটা কিন্তু কমানো যাবে না। মনে রাখতে হবে যে, ব্লাড গ্লুকোজ় লেভেল বেড়ে গেলে তা ওষুধ এবং চিকিৎসার মাধ্যমে কমানো যেতে পারে। তবে হুট করে সেই লেভেল কমে গেলে সমূহ বিপদ হতে পারে,”।

৪০-৫০ বছর বয়সে কারও যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে, বুঝতে হবে যে, তার শরীরে আরও আগেই ইনসুলিন রেজ়িস্ট্যান্স তৈরি হয়েছে। সেই ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। কে কতোটা ইনসুলিন নিচ্ছেন, তার উপরেই মূলত নির্ভর করে শর্করা, প্রোটিনের পরিমাণ ধার্য করে খাদ্যতালিকা তৈরি করে থাকেন পুষ্টিবিদরা। এরসঙ্গে সেই রোগীর উচ্চতা, ওজন ইত্যাদি দিকও মাথায় রাখতে হয়। তাই কোনও একটা ডায়েট সকল রোগীর জন্যই ঠিক নয়। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ মতো ডায়েট মেনে চলতে হবে।

আবার কার ইনসুলিন বাড়বে নাকি কমবে, তা নির্ভর করে কার্ব কাউন্টিংয়ের উপরেও। সেই পদ্ধতিটা খুব সহজ নয় কিংবা সকলের জন্য একও নয়। এই ক্যালরির হিসেব ব্যক্তিবিশেষে পাল্টে গিয়ে থাকে। তাই সেই ক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া একান্ত কাম্য। ইনসুলিন স্পাইকের উপরে নির্ভর করেই পুষ্টিবিদরা খাদ্যতালিকা তৈরি করে দেন।

আবার নিয়াসিন, ভিটামিন সি, ই, কে, এ, সেলেনিয়াম ইত্যাদি ভিটামিনস এবং মিনারেলস আমাদের শরীরে ইনসুলিন নিঃসরণে সহায়ক। এগুলো মাছ, ডিম ইত্যাদি প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং নানা রকম আনাজপাতি, ফলের মধ্যে পাওয়া যায়। তাই খাদ্যতালিকায় এই ধরনের খাবারও রাখতে হবে।

মেনোপজ়ের সময় কী করবেন

মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪০ হতে ৫০-এর মধ্যে সাধারণত হরমোনাল ইমব্যালান্স হতে দেখা যায়। মেনোপজ় কিংবা পেরিমেনোপজ়াল সময় থেকেই হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে থাকে বা দেখা যায়। এই সময় ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। তখন অনেকেরই চলে হরমোন থেরাপি। এই সময় মুড সুয়িং এবং অবসাদ দেখা দিতে পারে। তাই প্রাণায়াম, যোগব্যায়ামের পাশাপাশি মুড এলিভেটিং খাবার অর্থাৎ আমন্ড, ডার্ক চকলেট, টক দই, পালং শাক, বেরি, কলা খুব ভালো কাজে দেয়। তাছাড়াও নানা রকম ডাল, মাছ, স্কিমড মিল্ক, টক দই, বাদাম এবং নানা রকম সিডস রাখতে পারেন আপনার খাদ্যতালিকায়। এতে শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম, ফাইবার, প্রোটিন,ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের জোগানও বজায় থাকবে।

পুরুষদের ক্ষেত্রে করণীয়

শুধু মহিলায় নয়, এই বয়সের পুরুষদের মধ্যেও টেস্টোস্টেরন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হতে পারে। তাদের যৌন চাহিদা অনেক সময় কমে আসে। যে কারণে সম্পর্ক স্থাপনে অনীহাও দেখা দেয়। এই ক্ষেত্রে ডার্ক চকলেট, অয়েস্টার, রসুন, অ্যাসপারাগাস, পাম্পকিন সিডস খাদ্যতালিকায় রাখলে বেশ উপকার পেতে পারেন।

তবে হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ শুরু করা কিংবা হরমোন থেরাপির দরকারও পড়তে পারে। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জানুয়ারী ২১, ২০২৪ 5:27 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

ইয়েমেনে ১ ঘণ্টার ব্যবধানে দুইবার মার্কিন বিমান হামলা

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইয়েমেনের আল-হুদায়দাহ বিমানবন্দরে মাত্র এক ঘণ্টার ব্যবধানে দুইবার বিমান হামলা…

% দিন আগে

সাপ গলায় জড়িয়ে খিলখিলিয়ে হাসি কিশোরীর!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেখেই যে কারও গা শিউরে উঠবে। বিরাট আকারের সাপ গলায়…

% দিন আগে

পঞ্চগড়ের ঐতিবাহী মির্জাপুর শাহী মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১৬ কার্তিক ১৪৩১…

% দিন আগে

বদলে যাওয়া আবহাওয়ায় জ্বর? দ্রুত সেরে উঠতে মেনে চলুন চিকিৎসকের কয়েকটি পরামর্শ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাইরাল ফিভারে আক্রান্ত হওয়ার পর কোন কোন ওষুধ আপনি খাবেন?…

% দিন আগে

ইউসিবি ৫০১তম পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত: ৩২% বৃদ্ধি পেয়ে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কর পরবর্তী নিট মুনাফা ২৬২ কোটি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার গুলশানে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ৫০১তম পরিচালনা…

% দিন আগে

মুক্তির আগের দিনই সৌদিতে নিষিদ্ধ হলো বলিউডের দুই সিনেমা!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মুক্তির মাত্র ১ দিন বাকি থাকতেই বলিউডের ‘ভুলভুলাইয়া ৩’ ও…

% দিন আগে