দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কিছু অভ্যাসের হাত ধরেও শরীরে ছড়িয়ে পড়ে মারণরোগের বীজ। তাই সময় থাকতে সাবধানে থাকতে হবে। আর সেজন্য জেনে নিতে হবে কোন অভ্যাসগুলো আরও উস্কে দেয় ক্যানন্সারের প্রবণতা।
চিকিৎসকরা বলে থাকেন, মারণরোগ থেকে দূরে থাকতে কিছু নিয়মানুবর্তিতার প্রয়োজন। অনেকেই শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে যথেষ্ট সচেতনও। শরীরের যত্ন নিতে জীবনকে যতোটা নিয়মে বাঁধা দরকার, অনেকেই তার চেয়েও বেশি কিছু করেন। কোথাও খামতি থেকে যাচ্ছে কি-না, সেদিকে খেয়াল থাকে সকলের। তবে এতো কিছুর মধ্যেও দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু ভুল হয়েই থাকে, যা অনেক সময় মারণরোগও ডেকে আনতে পারে। শরীরের কোনও কোষ অপ্রতিরোধ্যভাবে বিভাজিত হতে শুরু করলে তা ক্যান্সার। চিকিৎসকেরা বলেছেন, ক্যান্সারের নানা কারণ থাকে। যারমধ্যে কিছু ক্ষেত্রে দৈনন্দিন অভ্যাস এবং কিছু কাজের হাত ধরেও শরীরে ছড়িয়ে পড়ে মারণরোগের বীজ। তাই সময় থাকতে সাবধান হতে হবে। আ সেজন্য জেনে নিতে হবে কোন অভ্যাসগুলো আরও উস্কে দেয় ক্যান্সারের প্রবণতা।
প্যাকেটবন্দি মাছ, মাংস, বেকন, সস, সালামি, হ্যামের মতো খাবারের লোভনীয় স্বাদ বার বার এই ধরনের খাবারগুলোর দিকেই টেনে নিয়ে যায়। তবে এই ধরনের খাবারে কার্সিনোজেন উপাদানও রয়েছে। যে কারণে প্রক্রিয়াজাত খাবার অত্যাধিক পরিমাণে খেলে ক্যান্সারের বীজ শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে
বর্তমানে আধুনিক জীবনে মানসিক চাপ যেনো নিত্যদিনের সঙ্গী। মানসিক অস্থিরতা ও চাপ যে রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে ক্যান্সার তারমধ্যে অন্যতম। মানসিক চাপ শরীরকে ভিতর থেকে ক্লান্ত করে এবং কোষগুলোকে কমজোরি করে। যে কারণে কোষ দ্রুত ভাঙতে শুরু করে এবং শরীরে ক্যান্সারের বীজ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
অত্যাধিক দূষণ
অনেক সময় বায়ুদূষণের কারণেও মারণরোগের ঝুঁকি সমানভাবেই বাড়ে। তাই চিকিৎসকরা বাইরে বের হওয়ার আগে মাস্ক পরে নিতে বলেন। তবে অনেকেই তা করেনও না। দূষণের কারণে শরীরে কার্বন এবং তার নানা যৌগ জমে যায়। তার হাত ধরেই মারণরোগের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেতে পারে।
ধূমপানের অভ্যাস পরিত্যাগ
‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ মলিকিউলার সায়েন্স’-এ প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানা যায়, অত্যাধিক ধূমপানের কারণেও মুখগহ্বরের বিভিন্ন কোষে নানা রকম পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। ক্যান্সার দানা বাঁধার সব রকম উপাদান এতে মজুত থাকে। যে কারণে ধূমপানের অভ্যাস মারণরোগ ডেকে আনতে পারে, তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org