দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ কাউন্সিল সম্প্রতি এর ‘উইমেন ইন লিডারশিপ’(ডব্লিউআইএল) প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারী নারীদের প্রথম দলের জন্য আট সপ্তাহব্যাপী অনলাইন সেলফ- অ্যাকসেস লিডারশিপ অনলাইন কোর্স চালু করেছে।
লিঙ্গ সমতার ক্ষেত্রে নেতৃত্ব ও পিয়ার মেন্টরিং প্রোগ্রামের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে ২০২৪ এর ডব্লিউআইএল প্রোগ্রাম। এ প্রোগ্রাম ২০২০ সাল থেকে অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ উদ্যোগের লক্ষ্য লিঙ্গ সমতা নিশ্চিতে এবং নিজ নিজ খাত ও কমিউনিটিতে নারীদের নেতৃত্বের বিকাশে ভূমিকা রাখতে উদীয়মান নারী নেতৃত্বদের নেতৃত্ব অর্জনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা এবং সক্ষমতা তৈরিতে সহায়তা করা।
ব্রিটিশ কাউন্সিল, ক্লোর সোশ্যাল লিডারশিপ ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সাথে অংশীদারিত্বে এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস উইমেন নেটওয়ার্কের (বিসিএসডব্লিউএন) সহযোগিতায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ ২০২৪ উইমেন ইন লিডারশিপ (উইল) প্রোগ্রাম আয়োজন করেছে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিসিএসডব্লিউএন’র ৩০ জন উদীয়মান নারী নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন খাতের ২০ জন তরুণ নারী পেশাজীবী ডিজিটাল ফেলোশিপের মাধ্যমে তাদের নেতৃত্ব বিষয়ক সক্ষমতা এবং দক্ষতা বিকাশের সুযোগ পাবেন। যার মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ, অনলাইন নেটওয়ার্কিং, মেন্টরশিপ এবং অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করা সুযোগ। এ প্রোগ্রামে ছয়টি ভার্চুয়াল স্পিড মেন্টরিং সেশন আয়োজনে করা হবে, যেখানে অংশ নিবেন দেশের বিশিষ্ট এবং খ্যাতিমান নারী কর্মীবৃন্দ, যারা লিঙ্গ সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন ও সামাজিক ক্ষেত্রে নেতৃত্বদান সম্পর্কে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে তাদের নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন। এছাড়াও, এ প্রোগ্রামে আয়োজন করা হবে ছয়টি ওয়েবিনার। ওয়েবিনারগুলোতে অংশগ্রহণকারীরা কী শিখেছেন, তাদের ভাবনা ও অভিজ্ঞতা এবং প্রকল্প থেকে তাদের অর্জনগুলো সবার সাথে ভাগাভাগি করার এবং এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোকপাত করার সুযোগ পাবেন। আগামী মার্চে ঢাকায় একটি দিনব্যাপী নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট (উইল সামিট) আয়োজন করা হবে, যেখানে শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় কর্মরত নারীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্র নিয়ে নীতিনির্ধারক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়েরসুযোগ পাবেন।
অংশগ্রহণকারীরা অনলাইন কোর্স ও পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেদের নেতৃত্ব দক্ষতা বিকাশ এবং নিজ দেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে আন্তঃ-সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবেন। শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় কর্মরত নারীরা কীভাবে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে নিজ নিজ খাতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও উদ্ভাবন প্রভাবিত করার মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা অর্জন ত্বরান্বিত করা যায় তা তুলে ধরার সুযোগ পাবেন। অংশগ্রহণকারীরা লিঙ্গ-সমতা ও অন্তর্ভুক্তি অর্জনের ক্ষেত্রে নিজেদের সক্ষমতা বৃদ্ধি করার সুযোগ পাবেন। যার মাধ্যমে এ প্রোগ্রাম সামাজিক পুঁজির প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।
উইল প্রোগ্রামে পঞ্চাশ জন বৈচিত্র্যময় অংশগ্রহণকারীর দল অংশগ্রহণ করবে। এ দলে থাকবেন বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্ক থেকে ত্রিশজন সরকারি কর্মজীবী নারী এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল অ্যালামনাই নেটওয়ার্কের বিশজন নারী পেশাজীবী। উল্লেখ্য, গত ২২ জানুয়ারি ত্রিশজন সরকারি কর্মজীবী নারীদের প্রথম ব্যাচ সফলভাবে ভার্চুয়াল ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সায়লা ফারজানা বলেন, “ক্যাডার সার্ভিসের মধ্যে লিঙ্গ-সমতা এবং নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধি করা বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের অন্যতম লক্ষ্য। এই লক্ষ্যের সাথে একাত্মতা রেখে গৃহীত এই প্রোগ্রাম নারী নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। নেতৃত্বস্থানীয় পর্যায়ে প্রতিনিধিত্ব বাড়াতে নারীরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এমন প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমরা ক্যাডার সার্ভিসকে যেমন শক্তিশালী করে যাচ্ছি, তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ইতিবাচক উদাহরণ তৈরি করছি। এই অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগ বিসিএস উইমেন নেটওয়ার্কের লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পেশাজীবীদের ক্ষমতায়নের জন্য একটি ন্যায্য পরিবেশ তৈরিতে অবদান রাখবে এই প্রকল্প।”
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিশসা বলেন, “বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে বলা যায় যে, রাজনীতি, বিনোদন, ব্যবসা ও আইটি সহ অন্যান্য খাতের নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকায় নারীদের প্রতিনিধিত্ব অনেক কম। ব্রিটিশ কাউন্সিল উইমেন ইন লিডারশিপ (উইল) প্রোগ্রামের মাধ্যমে নারী নেতৃত্বের উন্নয়নে অবদান রাখতে পেরে গর্বিত। এই উদ্যোগের মাধ্যমে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমরা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার ৩০৪ জন শীর্ষস্থানীয় ভূমিকায় কর্মরত নারীদের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। প্রোগ্রামটি ক্লোর সোশ্যাল লিডারশিপ (ইউকে) এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের (বাংলাদেশ) সাথে অংশীদারিত্বে পরিচালিত হয়। এ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণ, মেন্টরশিপ (পরামর্শ) ও নেটওয়ার্কিংয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল ফেলোশিপ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।”
খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাঢহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org