দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা থেকে বেসামরিক মানুষ সরিয়ে নেওয়ার জন্য একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় স্থল অভিযান শুরুর বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অনড় অবস্থানে রয়েছেন। তিনি বলেছেন যে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পূর্ণাঙ্গ বিজয়ের জন্য এই অভিযানটি জরুরি।
নেতানিয়াহুর কাছ থেকে এমন ঘোষণা আসার পর গাজা থেকে বেসামরিক মানুষ সরিয়ে নেওয়ার জন্য সোমবার পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর সম্ভাব্য স্থল অভিযান নিয়ে বিভিন্ন দেশের সরকারের পাশাপাশি মানবিক সহায়তাদানকারী সংস্থাগুলো বারংবার উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে। তাদের আশঙ্কা, রাফায় স্থল অভিযান চালানো হলে বিপুলসংখ্যক বেসামরিক নাগরিক হতাহত হবেন।
বর্তমানে রাফায় প্রায় ১৪ লাখ মানুষ রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই অন্য এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে এখানে আশ্রয় গ্রহণ করেছে।
সোমবার নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে হিব্রু ভাষায় দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয় যে, গাজা উপত্যকার যুদ্ধের এলাকাগুলো থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নিতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে একটি পরিকল্পনা প্রস্তাব করলো ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
তবে কোথায়, কীভাবে বেসামরিক লোকদের সরিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে বিবৃতিতে বিস্তারিত কিছুই বলা হয়নি।
পবিত্র রমজানের পূর্বে গাজায় যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে দোহায় মিসর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞরা বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে ইসরায়েল এবং হামাসের প্রতিনিধিরাও অংশ নেন। দোহা বৈঠকের পরই গাজা থেকে বেসামরিক মানুষ সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে ইসরায়েল সেনাবাহিনী।
ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে যে, চলমান মধ্যস্থতা-প্রচেষ্টা যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির ক্ষেত্রে একটি বোঝাপড়া তৈরি করেছে। অপরদিকে হামাসের একটি সূত্র বলেছে যে, তারা আলোচনায় গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রত্যাহারের ওপরেই জোর দিয়েছেন।
অপরদিকে নেতানিয়াহু আরও বলেছেন, রাফায় স্থল অভিযান কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ইসরায়েলকে হামাসের বিরুদ্ধে পূর্ণ বিজয় এনে দেবে।
রবিবার নেতানিয়াহু সিবিএসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তারা যদি যুদ্ধবিরতির চুক্তিই করেন, তবে সেটি কিছুটা বিলম্বিত হবে। তবে স্থল অভিযান হবে। এটা তাদের করতেই হবে। কারণ হলো, পূর্ণাঙ্গ বিজয় অর্জনই তাদের লক্ষ্য। তারা পূর্ণাঙ্গ বিজয় থেকে বেশি দূরে নেই। সেজন্য কয়েক মাস লাগবে না। অভিযান শুরু করলে মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তা হয়েও যাবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org