দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তথ্য-প্রযুক্তির উৎকর্ষে বর্তমান সময়ে ঘর গৃহস্থালির কাজ থেকে শুরু করে কেনাকাটাসহ প্রায় সব কাজই অনলাইনে হয়ে থাকে। অনলাইনে ৪৮টি ডিম কিনতে গিয়ে ৬৫ হাজার টাকা গায়েব হলো এক নারীর!
বর্তমান সময়ের অনলাইনে এই নির্ভরশীলতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন অনলাইন গ্রোসারিগুলোতে মাঝে-মধ্যেই বেশ চটকদার এবং লোভনীয় ‘অফার’ দিয়ে থাকেন। সেটি খাবারের সামগ্রীই হোক, পোশাক, প্রসাধনী কিংবা ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেটই হোক; বিভিন্ন সংস্থা নানা রকমভাবে গ্রাহকদের জন্য অফারগুলো দিয়ে থাকে। সেই ‘অফার’ লুফে নিতে অনেকেই আবার কিছু না জেনে-বুঝেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন অনলাইন মাধ্যমগুলোতে।
তাছাড়া অনলাইনে কেনাকাটার সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার ঘটনাও প্রতিনিয়তই বাড়ছে। তেমনই একটি ঘটনা সম্প্রতি প্রকাশ্যে উঠে এসেছে।
ভারতের ব্যাঙ্গালুরুতে অনলাইনে সস্তায় ডিম কিনতে গিয়ে এখন পস্তাতে হচ্ছে জনৈকা তরুণীকে। মাত্র ৪৯ রুপিতে চার ডজন অর্থাৎ ৪৮টি ডিম পাওয়া যাবে এমন অফারের ফাঁদে পা দিয়েছিলেন ওই তরুণী। যে কারণে তিনি খোয়ালেন ৬৫ হাজার টাকা!
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে যে, ব্যাঙ্গালুরুর এক তরুণী অনলাইনে সস্তায় ‘অফারে’ ডিম কেনার চেষ্টাও করেন। তবে সেই ডিমের কারণে যে তাকে হাজার হাজার টাকা খোয়াতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি ওই নারী।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ওইদিন ব্যাঙ্গালুরুর বসন্তনগরের এক তরুণী অনলাইনে বিভিন্ন সামগ্রীর দরদাম দেখছিলেন। কোন কোন অনলাইন গ্রোসারি কি কি ছাড় দিচ্ছে সেইসব দেখতে দেখতে একটি বিজ্ঞাপনের ওপর তার নজর পড়ে। লোভনীয় ‘অফারে’ ডিম দেওয়া হচ্ছে বলে সেই বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়।
প্রতারণার শিকার ওই নারী দাবি করেছেন, ‘বিজ্ঞাপনে লেখা ছিলো, মাত্র ৪৯ রুপিতে চার ডজন ডিম কেনা যাবে! যেখানে ভারতে এক একটি ডিমের দাম সাড়ে ৬ থেকে ৭ রুপি, সেই হিসেবে ৪৮টি ডিমের দাম ৩০০ রুপিরও বেশি হয়। তবে সেই ডিম যদি ৪৯ রুপিতে পাওয়া যায় তাহলে তো অনেকটাই লাভ! তবে লাভের গুড় যে পিঁপড়ায় খাওয়ার জন্য ওত পেতে রয়েছে, ওই বিজ্ঞাপনই যে একটি টোপ, সেটিও ধরতে পারেননি ওই নারী।’
প্রতারণার ফাঁদে পড়া নারী দাবি করেছেন যে, একটি জনপ্রিয় সংস্থা নামমাত্র দামে ডিম কেনার ‘অফার’ দেয়। ডিম কেনার জন্য একটি লিঙ্কও দেওয়া ছিলো ওই বিজ্ঞাপনটির পাতায়। বিষয়টি সম্পর্কে তিনি বলেন, “সেই লিঙ্কে ক্লিক করতেই আমাকে নতুন একটি পাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মুরগি পালনসহ ডিম কিভাবে সংগ্রহ করতে হয় ও বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যই দেওয়া ছিলো। ওই পাতার নিচের দিকে নামতেই দেখি সেখানে বলা রয়েছে যে, ৯৯ টাকায় আট ডজন ডিম পাওয়া যাচ্ছে। তারসঙ্গে আরও কয়েকটি ‘অফার’ও ছিলো। আমি ৪৯ টাকায় চার ডজন ডিমের ‘অফার’টিতেই ক্লিক করেছি।”
তিনি আরও বলেন, ‘ওই পাতায় ক্লিক করতেই তাকে আরও একটি নতুন পাতায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডিম সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেওয়া ছিল। সেখানে তার ব্যাংক কার্ডের তথ্যও চাওয়া হয়।’
ব্যাঙ্গালুরুর ওই নারীর কথায়, ‘আমি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডের তথ্য নির্ধারিত জায়গাতেই দিই। তারপর অর্ডারের জন্য ক্লিক করি। এরপর সেটি নতুন একটি পাতায় নিয়ে যায়। সেখানে পেমেন্ট সংক্রান্ত ক্রেডিট কার্ডের তথ্য, সিভিভি নম্বরও দেই। টাকার পরিমাণ লিখে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গে একটি ওটিপি আসে। সেই ওটিপি দেওয়ার আগেই অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৮,১৯৯ রুপি (যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৬৩৭৬৯ টাকা) মুহূর্তেই অ্যাকাউন্ট হতে গায়েব হয়ে যায়।’
এরপরই ব্যাংক হতে তার কাছে ফোন আসে। তখন তাকে জানানো হয় যে, এই টাকা তিনি নিজে ব্যবহার করেছেন কি-না। তখন তিনি ব্যাংককে পুরো বিষয়টি জানিয়ে দেন। তখন তারা সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাকাউন্টটি ব্লক করে দেয়। তবে ততোক্ষণে ওই নারীর ৪৮ হাজার রুপি তার নাগালের বাইরে চলে গেছে। তারপর ওই নারী পুলিশের দ্বারস্থ হন। থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org