দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের একমাত্র চতুর্বার্ষিক পত্রিকা হলো ফ্রান্সের ‘লা বুজি ড্যু স্যাপাখ’। পত্রিকাটির নতুন সংখ্যা এ বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত হয়েছে। ফ্রান্স থেকে প্রকাশিত ২০ পৃষ্ঠার এই ব্যঙ্গাত্মক ট্যাবলয়েডটি কেবলমাত্র ২৯ ফেব্রুয়ারিতেই প্রকাশ পায়।
‘লা বুজি ড্যু স্যাপাখ’ পত্রিকার প্রথম সংখ্যাটি প্রকাশ হয়েছিল ১৯৮০ সালে। এই বছর প্রকাশিত হলো এই পত্রিকার ১২তম সংখ্যা। পত্রিকাটি ২ লাখ কপি ছাপানো হয়। আর দাম রাখা হয় ৪.২০ ডলার। এই দাম রেখে প্রকাশনার খরচের চেয়েও অনেক বেশি টাকা উঠে আসে। তবে এই পত্রিকাটির কোনো অনলাইন সংস্করণ নেই। এটি শুধু পত্রিকা এজেন্ট এবং নিউজপেপার স্ট্যান্ডে কিনতে পাওয়া যায়।
পত্রিকাটির সম্পাদক জাঁ ডি’ইন্ডি সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, ‘প্রথম সংখ্যাটি মাত্র দুই দিনের মধ্যে বিক্রি হয়ে যাওয়ার পর, পত্রিকা এজেন্টরা আরও কপি চাইলো। কাজেই আমরা বললাম, ঠিক আছে, তোমরা পত্রিকাটি পাবে তবে ৪ বছর পর একবার।’
ইন্ডি আরও বলেন, ‘পত্রিকাটি এখনও আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলেই বের করি। আমরা কোনো বারে বসে ড্রিঙ্ক করতে করতেই নানা আইডিয়া নিয়ে কথা বলি। দারুণ মজাও পাই আমরা। তবে পাঠকরাও মজা পান, তাহলে সোনায় সোহাগা।’
লা বুজিতে প্রথাগত পত্রিকার মতোই সব বিষয়বস্তুই থাকে। রাজনীতি, খেলাধুলা, আন্তর্জাতিক খবর, শিল্প, ধাঁধা, তারকাদের জীবন নিয়ে নানা গুজব- সবই ঠাঁই পায় এই পত্রিকায়। তবে খবরগুলোতে দারুণ রসাত্মক মন্তব্য দেওয়া হয়ে থাকে।
চলতি সংখ্যার প্রধান খবরের শিরোনাম হলো- আমরা সবাই বুদ্ধিমান হবো। এআই কীভাবে পরীক্ষা এবং বুদ্ধিবৃত্তিক অর্জনকে অপ্রয়োজনীয় করে তুলছে, তা নিয়েও লেখা হয়েছে খবরটিতে।
এ বছর দ্বিতীয় প্রধান খবরের শিরোনাম ছিলো ‘নারী হওয়ার আগে পুরুষদের যে বিষয়টি জানা প্রয়োজন’। রূপান্তরকামী পুরুষরা যেসব ‘চ্যালেঞ্জের’ সম্মুখীন হতে পারেন, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই লেখায়।
ডি’ইন্ডি বলেন, ‘এগুলো সবই ফ্রেঞ্চ হিউমার, অন্য ভাষায় এসবের অনুবাদও সম্ভব নয়। আমরা নেহায়েত নির্দোষ মজা করতে চাই, তবে কোনো নোংরামি নয়। কারও প্রতি নিষ্ঠুর না হয়েই মজা করতে চাই।’
খেলার পাতায় সম্পাদকরা অলিম্পিকে সবার প্রথম বাদ পড়া ক্রীড়াবিদের জন্য উইনস্টন চার্চিল পুরস্কার দেওয়ার সুপারিশও করেছেন। যেহেতু চার্চিলের মূলনীতিই ছিল- পত্রিকাটির মতে- নো স্পোর্ট, তাই এই সুপারিশটি করেছেন তারা।
মজার বিষয় হচ্ছে, একটি ধারাবাহিক গল্পও স্থান পেয়েছে এবারের সংখ্যাটিতে। গল্পটির নাম ‘দ্য ড্রাউনিং ইন দ্য পুল’। এই গল্পটির পরবর্তী কিস্তি প্রকাশিত হবে ২০২৮ সালে।
‘লা বুজি ড্যু স্যাপাখ’র নাম রাখা হয়েছে ফ্রান্সের একটি কার্টুন চরিত্রের নামানুসারেই। লা স্যাপাখ ক্যামেনবার্ট নামে ওই কার্টুন চরিত্রটি সৃষ্টি করা হয় ১৮৯০-এর দশকের সেনাদের জীবন যাপন দেখানোর জন্যই।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org