দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চোখ ভালো রাখতে কাজের ফাঁকেই চোখের বিশ্রাম নেওয়াটা জরুরি। তবে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে হলে, চোখের নীচের ফোলা ভাব কমাতে, চোখ থেকে পানি পড়ার মতো সমস্যা কমাতে খাদ্যাভ্যাসেও বদল আনতে হবে।
চল্লিশ পেরিয়ে গেলেই চোখের সমস্যা দেখা দেওয়া নতুন কিছুই নয়। তবে সাম্প্রতিক সময় কমবয়সেই চোখ নিয়ে নাজেহাল হতে হচ্ছে অনেককে। তার একটা বড় কারণই হলো দীর্ঘক্ষণ ল্যাপটপ এবং মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকা। পেশাগত প্রয়োজনেই যন্ত্রের সঙ্গে দিনের অধিকাংশ সময় কাটাতে হয়। চোখের সিংহভাগ সমস্যার নেপথ্যেই রয়েছে এই যন্ত্রের সঙ্গে সহাবস্থান। সেইসঙ্গে কম ঘুম, অত্যাধিক ক্লান্তি, চোখের সঠিক যত্ন না নেওয়া- এই কারণগুলোর জন্যেও চোখের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই চোখ ভালো রাখতে কাজের ফাঁকে চোখের বিশ্রামও নেওয়াটা জরুরি। তবে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে, চোখের নীচের ফোলা ভাব কমাতে হলে, চোখ থেকে পানি পড়ার মতো সমস্যা কমাতে খাদ্যাভ্যাসেও বদল আনতে হবে।
ভিটামিন এ
আমাদের চোখের জন্য অপরিহার্য একটি উপাদান হলো ভিটামিন এ। ভিটামিন এ চোখের অসুখের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগনি রশ্মি থেকে চোখ সুরক্ষিত রাখতে ভিটামিন এ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে দুধ, দইয়ের মতো ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে।
ওমেগা থ্রি
চোখের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাটি অ্যাসিডই হলো এই ওমেগা থ্রি। রুই, কাতলা, ইলিশের মতো যেসব মাছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, সেটি বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। এই ধরনের খাবারে চোখের মণি ভালো থাকে। আবার দৃষ্টিশক্তিও বাড়ে। চোখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যাও তখন কমে।
ভিটামিন সি
ভিটামিস সি সমৃদ্ধ ফল চোখ ভালো রাখতে সাহায্য করে। কমলালেবুও চোখের জন্য অত্যন্ত ভালো। এই ভিটামিন রক্ত চলাচলের ক্ষেত্রে খুবই জরুরি। চোখে রক্ত চলাচল ভালো হলে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কাও তখন কমে। চোখের প্রদাহজনিত সমস্যা কমাতেও ভিটামিন সি অপরিহার্য।
বিটা ক্যারোটিন
চোখ ভালো রাখতে গাজরের মতো উপকারী জিনিস খুব কমই রয়েছে। গাজরে বিদ্যমান বিটা–ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-র জোগান দেয়। নিয়মিত গাজর খেলে চোখে সংক্রমণের আশঙ্কাও তখন কমে যায়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org