দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আজকের কথা নয়, সেই ১৯৬০ সালে ইতালির উপনিবেশ থেকে বেরিয়ে সোমালিয়ার জন্ম। আফ্রিকার সুইজারল্যান্ড নামেই পরিচিত ছিল সোমালিয়া। আজ সোমালিয়া যেনো এক বিভীষিকার নাম।
দেশটির নাম শুনলেই সবার চোখে ভাসে যুদ্ধ বিগ্রহ ও জলদস্যুদের কথা। বিদেশি মাছ ধরা নৌ যানের উপস্থিতি ক্রমশ বাড়তে থাকলে স্থানীয় জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দস্যুবৃত্তির দিকেই ঝুঁকে পড়েন।
তবে ২০০৫ সালের পর হতে সোমালিয়ান জলদস্যুরা সংঘবদ্ধ হয়ে বৃহৎ পরিসরে আক্রমণ শুরু করে দেয়। সমুদ্র বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং দক্ষতার কারণে তারা কেবল ক্ষিপ্রগতিতেই নয় বরং আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হানা দেয় জাহাজগুলোতে। যা তাদের দস্যুবৃত্তিতে অনেকটাই এগিয়েও নিয়েছে।
ভারত মহাসাগরে দুবাই যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিক এবং ক্রুকে জিম্মি করেছে ওইসব জলদস্যুরা।
সোমালিয়ার জলদস্যুদের জানতে তৈরি করা হয়েছে বেশ কয়েকটি সিনেমা। বেশির ভাগ সিনেমা সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত হয়।
আ হাইজ্যাকিং
ডেনমার্কের একটি কার্গো জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত ড্যানিশ সিনেমাটি মুক্তি পেয়েছিলো ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। এতে কার্গো জাহাজের মালিক এবং জলদস্যুদের সঙ্গে আলোচনাকে নাটকীয়ভাবে তুলে ধরা হয় এই সিনেমাতে।
স্টোলেন সিস
২০০৮ সালের ৭ নভেম্বর ড্যানিশ জাহাজ এমভি সিইসি ফিউচার ছিনতাইয়ে ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচিত হয়। এই সত্য ঘটনাটি অবলম্বনে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্রটি ২০১২ সালে মুক্তি পায়।
ফিশিং উইদাউট নেটস
এই সিনেমাটিতে জলদস্যুদের জীবনকে পর্দায় তুলে এনেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাতা কাটলার হডিয়র্ন। সোমালিয়ার জেলেদের কীভাবে জলদস্যুতায় বাধ্য করা হয়, সেই গল্পই তুলে ধরা হয়েছে এই সিনেমায়।
দ্য প্রজেক্ট
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাংবাদিক অ্যাডাম চারলস্কি প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেন। সোমালিয়ার জলদস্যুতা শিপিং বিশ্বকে কতোটা হুমকিতে ফেলছে; এটিকে মোকাবিলা করতে কী করা যায়- এইসব বিষয় নিয়ে নির্মিত হয়েছে এই সিনেমাটি।
ক্যাপ্টেন ফিলিপস
ড্যানিশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কার্গো জাহাজ মারস্ক অ্যালবাবা ২০০৯ সালের ৭ এপ্রিলে ছিনতাই করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এই জাহাজটির ক্যাপ্টন ছিলেন রিচার্ড ফিলিপস। জিম্মি অবস্থায় দুর্বিষহ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন ফিলিপস; সেই ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত সিনেমাটি মুক্তি যায় ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org