দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস নতুন করে যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব দিয়েছে সেটিকে ‘অযৌক্তিক’ বিষয়বস্তু রয়েছে দাবি করে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু।
ওই প্রস্তাব নাকচ করে গাজার সর্বদক্ষিণের নগরী রাফায় হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন তিনি। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন। খবর আল জাজিরা এবং টাইমস অব ইসরায়েলের।
তবে রাফায় ইসরায়েলের এই অভিযানের বিরুদ্ধে সতর্কতা জানিয়েছে, জাতিসংঘ, জার্মানি এবং নেদারল্যান্ডস। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ইসরায়েলকে সতর্ক করেছে বলে জানা যায়।
উল্লেখ্য, হামাসের পক্ষ হতে ৪২ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠানো হয় ইসরায়েলকে। বিষয়টি নিয়ে গতকাল (১৫ মার্চ) বৈঠকে বসেছিল ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা। বৈঠকের পর ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু বলেন যে, হামাস যে ধরনের প্রস্তাব দিয়েছে তাতে ‘অযৌক্তিক’ দাবি-দাওয়া রয়েছে।
নেতানিয়াহু আরও বলেন, রাফাহ শহরকেন্দ্রীক অভিযানের জন্য ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) যে পরিকল্পনা করেছে তা অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা।
ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজার অন্যান্য এলাকা হতে প্রায় ১০ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি এই স্থানটিতে আশ্রয় নিয়েছে। ইসরায়েল রাফায় বড় ধরনের হামলা শুরু করলে ব্যাপক বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হয়। এছাড়াও গাজাজুড়ে মানবিক সংকট আরও প্রকট হবে।
এদিকে ইসরায়েলি হামলার অনুমোদন করার প্রেক্ষাপটে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বেয়ারবক এক্সে বলেছেন যে, রাফায় বড় ধরনের হামলা কোনোভাবেই যৌক্তিক হতে পারে না। সেখানে ১০ লাখের বেশি লোক আশ্রয় গ্রহণ করেছে। তাদের কোথায় যাওয়ার জায়গা নেই। আর লোক যাতে না মরে ও পণবন্দীরা যাতে করে মুক্তি পেতে পারে, সেজন্যই অবিলম্বে মানবিক অস্ত্রবিরতির দরকার।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org