দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ইতিহাসের পাতায় নতুন এক অধ্যায় লিখলো। টেক সংস্থা কগনিশন নিয়ে এলো বিশ্বের প্রথম এআই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার! তার নাম ডেভিন।
আর এসেই দুনিয়াজুড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে বিশ্বের প্রথম এই রোবট ইঞ্জিনিয়ার। যার দক্ষতার জোরে কাজ হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন অনেক টেক এক্সপার্ট।
দাবি করা হয়েছে যে, ডেভিন সিঙ্গেল প্রম্পট দিয়েই তৈরি করে ফেলতে পারে একটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট। কোডিং হতে বাগ ফিক্স (প্রযুক্তিগত ত্রুটি) সব কিছু একাই করতে পারে এই রোবট ইঞ্জিনিয়ার। বানাতে পারে ভিডিও, আবার তা এডিট করে ক্লায়েন্টদের কাছে উপস্থাপনও করতে পারে সে। এটি অনেকটা মাইক্রোসফটের বানানো এআই অ্যাসিস্ট্যান্ট কোপাইলট ও ওপেনএআই চ্যাটজিপিটির মতো। কিন্তু সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিতও ডেভিন। সে কারণে অদূর ভবিষ্যতে বহু টেক সংস্থার কাছে ভরসার পাত্রও হয়ে উঠতে পারে এই এআই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার।
কগনিশন দাবি করেছে, সফটওয়্যার বানানো এবং পরিচালনার ক্ষেত্রে যা যা প্রয়োজন, তা সবকিছুই নিখুঁতভাবে করতে সক্ষম ডেভিন। তবে সংস্থাটি এও জানিয়েছে, মানুষের চাকরির বাজার নষ্ট করা তাদের কোনো উদ্দেশ্যে নয়, বরং মানুষের কাজকে আরও সহজতর করে তুলতেই তারা এনেছে এই টুলটি।
নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে সংস্থাটি পোস্ট করে বলেছে, বিশ্ববাসীকে প্রথম এআই সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ডেভিনের সঙ্গে পরিচয় করাতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। বিশ্বের সবচেয়ে বড় এআই সংস্থাগুলোর প্র্যাকটিকাল পরীক্ষায় পাশও করেছে ডেভিন। এমনকি বাস্তব দুনিয়াতে কর্মী হিসাবে নিজের দক্ষতার পরিচয়ও দিয়েছে ডেভিন।
যে যে দক্ষতা রয়েছে ডেভিনের
সে মানুষের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে পারবে, এমন পরিকল্পনা নিয়েই বাজারে আনা হয় এআই ইঞ্জিনিয়ার ডেভিনকে। সফটওয়্যার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে যে বিশেষ সুবিধাগুলো এ এআই ইঞ্জিনিয়ার দিতে পারবে সেগুলো হলো-
# কোডিং ও বাগ ফিক্স করা।
# সিঙ্গেল প্রম্পট দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করা।
# রিয়েল টাইম আপডেট করা।
# ফিডব্যাক দেওয়া।
# ডিজাইনিং করা।
তাছাড়াও ওপেন সোর্স প্রোজেক্ট থেকে বিভিন্ন সমস্যা খুঁজে বের করে তা সমাধান করতে পারে এই রোবট ইঞ্জিনিয়ার ডেভিন।
কগনিশনের পক্ষ হতে আরও দাবি করা হয়েছে যে, এর পূর্বে যে এআই মডেলগুলো এসেছে, দক্ষতার দিক দিয়ে তাদেরকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ডেভিন। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং জগতে গেম চেঞ্জার হতে পারে এই টুলটি।
সংস্থার দাবি, ডেভিনকে বাকিদের থেকে যা আলাদা করে তোলে তা হলো দূরদর্শিতা ও জটিল কাজ সহজেই করার দক্ষতা। কয়েক হাজার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে রোবট ইঞ্জিনিয়ারের কাছে। সেইসঙ্গে ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সার্ভিস আপগ্রেড (পরিষেবা উন্নত) করতেও পারে রোবট ইঞ্জিনিয়ার ডেভিন।
শুধুমাত্র ল্যাবটেস্টই নয়, আপওয়ার্কের মতো সংস্থাতে কাজের ক্ষেত্রেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে রোবট ইঞ্জিনিয়ার ডেভিন। অর্থাৎ ভার্চুয়াল জগতের পাশাপাশি বাস্তব দুনিয়াতেও যে সে সমানভাবেই দক্ষ তা প্রমাণ করেছে বিশ্বের প্রথম এআই ইঞ্জিনিয়ার ডেভিন!
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org