দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত ২০ বছরে বিশ্বের বিশাল এক এলাকাজুড়ে সমুদ্রের রং পরিবর্তন হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে সমুদ্রের রং নীল থেকে পরিবর্তিত হয়ে রীতিমতো সবুজ হয়ে গেছে! বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি তথা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
আকাশের ছায়া সমুদ্রের ওপর পড়ার কারণে এর রং নীল দেখায়। তবে সম্প্রতি ন্যাচার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আকাশের নীল ছায়া সত্ত্বেও অর্ধেকের বেশি সমুদ্রে সবুজাভ আভা শনাক্ত হয়, যা পৃথিবীর মোট স্থলভূমির চেয়েও বড়। এর অর্থ হলো সমুদ্রের পানিতে এমন কিছু ঘটছে, যার প্রভাবে এই পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। -খবর সিএনএন এর।
‘সমুদ্রের রং পরিবর্তনের অর্থই হলো সেখানকার জীবনচক্র কিংবা বাস্তুতন্ত্রের পরিবর্তন। সামুদ্রিক প্রাণীদের খাদ্যচক্রের সর্বনিম্নে অবস্থান করে প্ল্যাংকটন। যদি প্ল্যাংকটনের বৃদ্ধির কারণে পানির রঙে পরিবর্তন ঘটে থাকে তাহলে তার কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে’ – গবেষক দলের প্রধান বিবি কায়েল।
সমুদ্রে এতো কিছু ঘটে গেলেও তা খালি চোখে বোঝা বেশ কঠিন। সেজন্য বিজ্ঞানীরা ২০০২-২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় মোডিস অ্যাকুয়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করেই এই সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
গবেষক দলের প্রধান বিবি কায়েল বলেছেন, এটি একদিনে হয়নি, ২০০২ সাল থেকে একটু একটু করে সমুদ্রের রং পরিবর্তন হয়েছে। এরসঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও রয়েছে।
তবে এই বিষয়ে আশাবাদী হওয়ার তেমন কোনো সুযোগ নেই বলেও জানিয়েছেন বিবি কায়েল। তাঁর ভাষায়, এই ক্ষেত্রে খুব বেশি আশাবাদী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ হলো এমন অনেক সামুদ্রিক প্রাণী রয়েছে, যারা তাপমাত্রার ব্যাপারে বেশ স্পর্শকাতর। এমনকি বৈশ্বিক তাপমাত্রা বাড়লে তারা চিরতরে বিলুপ্তও হয়ে যেতে পারে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org