দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উত্তাল সেই দিন শেষে গভীর হতে শুরু করেছে কৃষ্ণপক্ষের রাত। ব্যস্ত শহর ঢাকা প্রস্তুতি নিচ্ছিলো ঘুমের। ঘরে ঘরে অনেকেই তখন ঘুমিয়েও পড়েছে। তখনও কেও জানে না কী ভয়ঙ্কর, নৃশংস এবং বিভীষিকাময় রাত আসছে বাঙালির জীবনে।
হঠাৎই যেনো খুলে গেলো নরকের সবকটি দরজা। রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হলো হন-উদ্যত নরখাদক পাকিস্তান সেনাবাহিনী। ছড়িয়ে পড়লো পুরো শহরময়। ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামে মৃত্যুক্ষুধা নিয়ে জলপাই রঙের ট্যাঙ্ক নেমে এলো শহরে। আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে উঠলো অত্যাধুনিক রাইফেল, মেশিন গান এবং মর্টার। নিরীহ মানুষের আর্তনাদে ভারি হয়ে গিয়েছিলো ওই রাতের বাতাস। নিরস্ত্র, ঘুমন্ত মানুষকে বর্বরোচিতভাবে হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত হলো পুরো বিশ্ববিবেক।‘অপারেশন সার্চ লাইট’র নামে পাকিস্তানি জলপাই রঙের দানবদের এক রাতে অর্ধ লক্ষ গণহত্যার সেই ভয়াল কালরাত আজ।
এটিকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক নৃশংস, ভয়ঙ্কর এবং বিভীষিকাময় কালরাত্রি বলা হয়। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও একুশে ফেব্রুয়ারির মতোই ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘটানো গণহত্যাকাণ্ডের দিনটি জাতীয়ভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে এই প্রস্তাব পাস করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রাত ১১টা থেকে ১১টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশব্যাপী প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে। তবে কেপিআই ও জরুরি স্থাপনাসমূহ এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকাল সাড়ে ১০টায় গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ পত্রিকার ভাষ্যমতে শুধু ২৫ মার্চ রাতেই বাংলাদেশের প্রায় এক লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তানি সরকার মুক্তিযুদ্ধকালে প্রকাশ করেছিল তাতে বলা হয়, ‘১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।’
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা
রাত সোয়া ১ টার দিকে ট্যাঙ্ক সাঁজোয়া গাড়ি এবং এক লরি সৈন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। তারা গুলি ছুড়তে ছুড়তে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে। রাত ১টা ২৫ মিনিটের দিকে এই বাড়ির টেলিফোনের লাইন কেটে দেয়া হয়। বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে চিরতরে নিভিয়ে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পাক হায়েনার দল। ২৫ মার্চ মধ্যরাতের পর অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে গ্রেফতার হওয়ার আগেই বঙ্গবন্ধু তৎকালীন ইপিআরের ওয়ারলেসের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার এবং সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন। ইপিআরের ওয়ারলেসে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ছড়িয়ে পড়ে দেশব্যাপী। এই ওয়্যারলেস বার্তা চট্টগ্রাম ইপিআর সদর দপ্তরেও পৌঁছায়। চট্টগ্রাম উপকূলে নোঙ্গর করা একটি বিদেশী জাহাজ এই মেসেজ পায়।
চট্টগ্রামে অবস্থানকারী আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান, জহুর আহমেদ চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনরা বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার বাণী সেই রাতে সাইক্লোস্টাইল করে শহরবাসীর মধ্যে বিলির ব্যবস্থা করে দেন। মাইকিং করে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার কথা বীর বাঙালিদের জানিয়ে দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতার ঘোষণার ভিত্তিতেই ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। আগামীকাল সেই মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on মার্চ ২৫, ২০২৪ 2:38 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বপ্ন দেখে তা মনে রাখা সত্যিই দুষ্কর। আর তাই রাতের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৩০ কার্তিক ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…