দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় ৬ মাস ধরে চলছে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন। ইসরায়েলের বর্বর হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজারে পৌঁছে গেছে। এদের মধ্যে নারী এবং শিশুর সংখ্যাই হলো প্রায় ২৪ হাজার।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা ৬ মাস ধরে চলা আগ্রাসনে আহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৭৫ হাজারে।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হতে গাজায় চালানো ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৩২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭৫ হাজার ৫৭৭ জন।
গাজা নিয়ন্ত্রণকারী সরকার বলছে যে, গত বছরের ৭ অক্টোবর হতে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) গাজা উপত্যকায় ২ হাজার ৯২২টি গণহত্যা চালায়। যে কারণে মোট ১৪ হাজার ৫০০ শিশু ও ৯ হাজার ৫৬০ জন নারী নিহত হয়েছেন। ধারনা করা হচ্ছে আরও ৭ হাজারের বেশি মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন কিংবা নিখোঁজ রয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত আহতের সংখ্যা ৭৫ হাজার ৫৭৭ জনে দাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি হামলার মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৩ শতাংশই নারী এবং শিশু। এছাড়াও গাজায় ১৭ হাজার শিশু তাদের পিতামাতা কিংবা যে কোনো একজন হারিয়েছেন।
অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতার কারণে গাজায় এ পর্যন্ত ৩০ জন শিশু প্রাণ হারিয়েছে। ৪৮৪ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী, ১৪০ জন সাংবাদিক ও ৬৫ জন সিভিল ডিফেন্স কর্মীও এইসময় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।
গুরুতর অসুস্থ এবং বিদেশে চিকিৎসার প্রয়োজন এমন আহতদের সংখ্যা ১১ হাজার ও ১০ হাজার ক্যান্সার রোগী অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবার কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়েছেন।
ইসরায়েলি বাহিনী ৩১০ জন স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ও ১২ জন সাংবাদিককে আটক করেছে। এদিকে গাজা উপত্যকায় ২০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গাজায় প্রায় ৭০ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে ও আরও ২ লাখ ৯০ হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
অপরদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় হামলা চালিয়ে ২৯৭টি মসজিদ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলেও প্রতিবেদনটিতে জানানো হয়। যারমধ্যে ২২৯টি মসজিদ সম্পূর্ণরূপেই ধ্বংস হয়ে গেছে ও ৩টি গির্জায়ও তারা হামলা চালিয়ে ধ্বংস করেছে।
ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ১৫৯টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানকে তাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। এতে ৫৩টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ৩২টি হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ হয়ে গেছে ও ১২৬টি অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org