দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের একটি ট্রেনে ভয়ঙ্কর একটি ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনের ভেতরে দেখা গেছে জ্যান্ত এক সাপ। শুধু তাই নয় চলন্ত ট্রেনেই এক যাত্রীকে সাপে কামড়ানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে!
এমনই এক ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটেছে ভারতের কেরলের কোট্টায়ামে মাদুরাইগামী একটি চলন্ত ট্রেনে। ওই ঘটনার পর তড়িঘড়ি করে যাত্রীকে সঙ্কটজনক অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে চলন্ত ট্রেনের মধ্যে সাপে কামড়ানোকে কেন্দ্র করে অন্যান্য যাত্রীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, ঘটনাটি ঘটেছে গুরুভায়ুর-মাদুরাই এক্সপ্রেসে ট্রেনের ৭ নং বগিতে। গত সোমবার সকাল ১০টার দিকে টেনকাসি শঙ্করানকোয়েলের বাসিন্দা কার্তিক সুব্রামানিয়ামকে (২১) ট্রেনের মধ্যে একটি সাপ কামড়ে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। তিনি মাদুরাই যাওয়ার জন্যই ট্রেনে উঠেছিলেন। নিজের আসনে বসে থাকার সময় কার্তিককে আচমকা এট্টুমানুর ও পিরাভোম স্টেশনের মাঝখানে সাপটি কামড় দেয়। বর্তমানে ওই ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, কিছু একটা কামড়ানোর পর ট্রেনের মধ্যেই কার্তিক সন্দেহ প্রকাশ করেন যে তাকে সাপে কেটেছে। তবে, ট্রেনের মধ্যে সাপ থাকার বিষয়টি প্রথমে অবিশ্বাস্য মনে হয় সহযাত্রীদের। তবে, ক্রমেই কার্তিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে এট্টুমানুর স্টেশনে তাকে নামিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে কোট্টায়াম মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তার অবস্থা স্থিতিশীল। কার্তিকের সহযাত্রীরা জানিয়েছেন, তারা ট্রেনের বগিতে একটি গর্ত দেখতে পেয়েছেন। তাদের অনুমান যে, সম্ভবত ওই গর্ত দিয়েই সাপ এসেছিল।
এদিকে, এই ঘটনার কারণে কোট্টায়াম রেলওয়ে স্টেশনে বেশ কিছুক্ষণ ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ট্রেনটি স্টেশনে পৌঁছানোর সঙ্গেসঙ্গেই ব্যবস্থা গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। দ্রুত ওই কামরা থেকে যাত্রীদের অন্য বগিতে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর বগিটি নিরাপদে সিল করা হয়। যদিও সেখান থেকে সাপ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, এই ট্রেনে আগে ইঁদুরও দেখা গিয়েছিল। যাত্রীদের ধারণা যে, ইঁদুরের উপদ্রবের কারণে তাদের ধরার জন্য ট্রেনের ভেতরে সাপও ঢুকে থাকতে পারে। তবে এই দিনের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে ট্রেনে যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে। এর জন্য রেলের বিরুদ্ধেই বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org