দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গাজা উপত্যকায় গত ৬ মাসে নিহত শিশুদের সংখ্যা আঁতকে উঠার মতো বলে মন্তব্য করেছেন ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ কাজে নিয়োজিত সংস্থা ফিলিস্তিন রিফিউজিস ইন দ্য নিয়ার ইস্টের (ইউএনআরডব্লিউএ) কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি।
সম্প্রতি রুশ বার্তাসংস্থা তাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেন, পুরো বিশ্বে গত ৪ বছরে বিভিন্ন যুদ্ধে যে সংখ্যক শিশু প্রাণ হারিয়েছেন, গত ৬ মাসে শুধু গাজায় তার চেয়েও বেশি শিশু নিহত হয়।
তিনি আরও বলেন, যদিও যুদ্ধ পরিস্থিতিতে হতাহতের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া খুবই কঠিন বিষয়। তবে আমি বিশ্বাস করি, ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে তা আঁতকে উঠার মতোই। গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিপ লাজারিনি বলেন, মাত্র ৬ মাসে ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা করা আসলেও অকল্পনীয় বিষয়। তাও এর মধ্যে ১৩ হাজারই হলো শিশু। গত ৬ মাসে গাজায় নিহত শিশুর এই সংখ্যা সারা বিশ্বে গত ৪ বছরে সব সংঘাতে নিহত শিশুর তুলনায় অনেক বেশি।
ফিলিপ লাজারিনিকে প্রশ্ন করা হয় যে, গাজায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজারের বেশি বলা হচ্ছে। নিহতের তুলনায় সংখ্যাটি অতিরিক্ত অনুমান করা হচ্ছে কী-না?
জবাবে ফিলিপ লাজারিনি বলেন, আমাদের তথ্য অনুযায়ী সংখ্যাটি মোটেও অতিরিক্ত অনুমান করা হচ্ছে না। বরং প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে আমি মনে করি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org