দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক ব্যক্তি ধারে চেয়েছিলেন বিড়ি, তবে তা দিতে অস্বীকৃতি জানান ৮০ বছর বয়সের এক বৃদ্ধা। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওই বৃদ্ধাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে জনৈক ব্যক্তির বিরুদ্ধে!
ভারতের উত্তরপ্রদেশের কানপুরে ঘটেছে এমন একটি লোমহর্ষক ঘটনা। ইতিমধ্যেই ঘটনার মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় পুলিশ। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কানপুরের ফিরোজপুর গ্রামে ছেলে জয়বীর সিংহ ও নাতনিকে নিয়ে থাকতেন রামকালী দেবী নামে এক বৃদ্ধা। তাদের একটি মুদির দোকানও ছিল। গত ৪ মে মেয়েকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে যান জয়বীর। ওইসময় দোকানে একা ছিলেন রামকালী দেবী।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাতে বাড়ি ফিরে জয়বীর দেখেন মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তারই মা। বৃদ্ধার মাথায়, গলায়, বুকে এবং পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাকে এমন অবস্থায় দেখে জয়বীর পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়। মায়ের এমন মৃত্যুর জন্য জয়বীর বিনয় কাটিয়া নামে একজনকে দায়ী করেন। থানায় তার নামে অভিযোগ দায়ের করেন।
শুধু বিনয়ই নন, সিপু নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধেও হত্যার অভিযোগ করেছেন জয়বীর। পরবর্তীতে পুলিশ তদন্তে নেমে অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু করেন। দুইদিন পর মূল অভিযুক্ত বিনয়কে গ্রেফতার করে পুলিশ। একইসঙ্গে একটি লাঠি উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ওই লাঠি দিয়েই পিটিয়ে বৃদ্ধাকে হত্যা করা হয়।
এদিকে পুলিশি জেরায় অভিযুক্ত জানান যে, রামকালীর দোকান হতে তারা ধারে জিনিসপত্র নিয়ে থাকেন। এক হাজার টাকা বাকি হয়েছে সেখানে। গত ৪ মে দোকানে গিয়ে ধারে বিড়ির প্যাকেট চাওয়ায় রামকালী তা দিতে অস্বীকার করেছিলেন।
বিনয়কে তিনি বলেন যে, ধারের টাকা শোধ না করলে কোনো জিনিস দেবেন না। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে হাতের লাঠি দিয়ে বৃদ্ধাকে মারতে শুরু করে বিনয়। খবরে বলা হয়, ঘটনার সময় তারসঙ্গে আরও একজন ছিলেন। তার বিরুদ্ধেও হত্যার অভিযোগ তোলা হয়েছে। পুলিশ অন্য অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে অভিযান চালাচ্ছে বলে খবরে বলা হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org