দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিহত ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মরদেহ নেওয়া হয়েছে তেহরানে। আজ (বুধবার ২২ মে) জানাজাসহ আনুষ্ঠানিকতা শেষে জন্মস্থান মাশহাদে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দাফন করা হবে রাইসিকে।
ইরানি বার্তা সংস্থা ইরনার বরাত দিয়ে রাইসির মরদেহ তেহরানে পৌঁছানোর খবর প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
গতকাল মঙ্গলবার (২১ মে) পূর্ব আজারবাইনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তাবরিজে প্রিয় নেতা রাইসির জানাজায় অংশ নিতে জড়ো হয়েছিলেন লাখো মানুষ। এমন মৃত্যু যেনো কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সমর্থকরা।
তাবরিজের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শ্রদ্ধা জানাতে রাইসির মরদেহ কুওম শহরে নেওয়া হয়। মরদেহ তেহরানে নেওয়ার পর সেখানেও জানাজা হবে। বৃহস্পতিবার মাশহাদে দাফন করা হবে ইরানের প্রেসিডেন্টকে।
অপরদিকে রাইসির হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়া নিছক দুর্ঘটনা নাকি পরিকল্পিত, তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই তদন্তও শুরু হয়েছে। দুর্ঘটনা তদন্তের জন্য উচ্চপদস্থ একটি প্রতিনিধিদলকে দায়িত্ব দিয়েছেন ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চীফ অব স্টাফ মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি।
তাছাড়াও রাইসিকে শেষ বিদায়ের প্রস্তুতির মধ্যেই ইরানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২৮ জুন এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের পদ শূন্য হওয়ার পরবর্তী ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হয়। এতে দেশটিতে আগামী ২৯ জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নিয়ম রয়েছে।
গত ১৯ মে বিকেলে ইরানের দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় প্রেসিডেন্ট রাইসি এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহিয়ানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের বহনকারী একটি হেলিকপ্টার। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টার পর পরের দিন ২০ মে বিধ্বস্ত হেলিকপ্টারটির সন্ধান পাওয়া যায়। পরে হেলিকপ্টারটিতে থাকা সব আরোহী অর্থাৎ ৯ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে ইরান সরকার।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org