দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ডিজিটাল পেমেন্টে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান ভিসা জানিয়েছে গত রমজান মাসজুড়ে ই-কমার্সের মাধ্যমে বাংলাদেশি ক্রেতাদের লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
এক তথ্য থেকে দেখা যায়, বিশেষ করে কার্ডের মাধ্যমে ডিজিটাল পেমেন্ট প্রদান ২৫ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যার প্রায় ৭০ শতাংশই ই-কমার্সের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
রোজার মাসে ভোক্তাদের কেনাকাটা বেড়ে যাওয়াও এবং ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড দুইভাবেই অর্থ পরিশোধ করায় খুচরা ব্যয়ের হার বেড়ে যায়। অনলাইন এবং দোকান থেকে কেনাকাটা এই দুই ক্ষেত্রেই ডিজিটাল পেমেন্টের ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি ঘটেছে; এর মাধ্যমে বোঝা যায়, মানুষ কার্ড ব্যবহার করে আরও নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক লেনদেনে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
এই বিষয়ে ভিসা বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সাব্বির আহমেদ বলেন, “ভোক্তারা কার্ড পেমেন্টে দ্রুত অভ্যস্ত হচ্ছেন দেখে আমি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত। রমজানের খরচের প্রায় ৭০ শতাংশই ই- কমার্সের মাধ্যমে হয়েছে। আমরা আশা করছি ঈদুল আজহার সময়েও এই গতি অব্যাহত থাকবে এবং ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার সমানভাবে বাড়বে। আর এর মধ্য দিয়ে ভিসা’র প্রতি মানুষের আস্থা রয়েছে বোঝা যায়।”
ভিসা কনসাল্টিং অ্যান্ড অ্যানালিটিক্স অনুযায়ী, মানুষ গত পবিত্র রমজান মাসে দোকানে বা সামনাসামনি কেনাকাটার তুলনায় অনলাইনে বেশি লেনদেন করেছেন। গতবছরের তুলনায় এই বছর সামগ্রিক ব্যয়ে ই-কমার্সের অংশ ৬ শতাংশ বেড়েছে; ভিসা কার্ডধারীরা ভ্রমণ, শিক্ষা ও ইউটিলিটির ক্ষেত্রে বেশি খরচ করেছেন। ভিসা’র পর্যবেক্ষণে আরও উঠে এসেছে, অনলাইন এবং দোকানে যথাক্রমে ৫০ ও ১৫ শতাংশের মতো ব্যয় বেড়েছে এবং দোকানে কেনাকাটার সময় প্রায় ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে হয়েছে।
তবে, ঈদের আগের দিনগুলোতে দোকানে ৬০ শতাংশেরও বেশি খরচ হয়। আর এসব দোকান ব্যয়ের মোট ৬৫ শতাংশই পোশাক, সুপারমার্কেট এবং ভ্যারাইটি স্টোর, মোবাইল ফোন ও অ্যাক্সেসরিজ এবং অন্যান্য খুচরা দোকানে হয়।
এই বিষয়ে সাব্বির আহমেদ আরও বলেন, “তরুণ প্রযুক্তিপ্রেমী জনসংখ্যা, স্মার্টফোনের ব্যবহার বৃদ্ধি ও ডিজিটাল রূপান্তরে উপযোগী সরকারি উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য একটি প্রতিশ্রুতিশীল আগামী তৈরি করছে।
লেনদেনের প্রাথমিক উপায় হিসেবে যেখানে নগদ অর্থ ব্যবহার করা হয়, সেখানে খুব স্পষ্ট একটি পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে; আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এই পরিবর্তনকে সহায়তা করতে পেরে আমরা আনন্দিত। উদ্ভাবনী উপায়ে কার্ডের ব্যবহার এবং গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে আমরা আমাদের ব্যাংক ও মার্চেন্ট অংশীদারদের সাথে ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি; যেন দেশজুড়ে আমাদের গ্রাহকরা খুব নিরাপদে, সহজ এবং স্বাচ্ছন্দ্যে যেকোনো সময় যেকোনো জায়গা থেকে ভিসা কার্ড ব্যবহার করতে পারেন।” খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org