দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের কারণে শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়লে মস্তিষ্কের মতো একইভাবে স্ট্রোক যে চোখেও হতে পারে, সে সম্পর্কে হয়তো অনেকের কোনো ধারণাই নেই।
স্ট্রোক! কথাটি শুনলে প্রথমেই মস্তিষ্কের কথা মনে হয়। স্ট্রোকের সঙ্গে যোগ রয়েছে হার্টের। বাড়তে থাকা গরম, আপেক্ষিক আর্দ্রতাজনিত কষ্ট সহ্য করতে না পেরে দিন কয়েক আগে অভিনেতা শাহরুখ খান হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। সেই খবরও সাধারণ মানুষের মনে বেশ ভয় ধরেছে। তবে গরমের দাপটে বা শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়ে পড়লে একইভাবে স্ট্রোক যে চোখেও হতে পারে, সেই সম্পর্কে হয়তো অনেকের কোনো ধারণাই নেই।
এই বিষয়ে চোখের চিকিৎসকরা বলেছেন, চোখ হলো শরীরের সবচেয়ে স্পর্শকাতর ইন্দ্রিয়। ঘুমের সময়টুকু বাদ দিলে দিনের বেশির ভাগ সময়ই চোখ খোলায় থাকে। বাতাসে মিশে থাকা ধুলো, ময়লা, জীবাণুর সঙ্গে ঝলসানো গরম হাওয়ার আঁচ সরাসরি চোখেই এসে লাগে। সেখান থেকেই শুরু হয় ইনফ্লেমেশন কিংবা প্রদাহ। চোখে স্বাভাবিক রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে চোখের প্রেশারও তখন বেড়ে যায়। রেটিনা তখন রক্তবর্ণ হয়ে ওঠে। স্ট্রোক তবে একইসঙ্গে দুই চোখে হয় না। তবে, রোগ নির্ণয়ে কিংবা চিকিৎসায় গাফিলতি করলে দুটি চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও চোখের সঙ্গে মস্তিষ্কেরও সরাসরি যোগসূত্রও রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে রক্তচাপ কিংবা শর্করা অনিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকলেও তার প্রভাব চোখের উপরে এসে পড়তে পারে। সেইসব কারণেও চোখে স্ট্রোক হতে পারে।
আপাতদৃষ্টিতে চোখে কী কী লক্ষণ ফুটে উঠতে পারে?
# চোখ লাল হয়ে ফুলে সমানে পানি পড়তে পারে।
# রেটিনার উপর রক্তজালিকা ভেসে উঠতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে রক্ত জমাট বাঁধতে দেখা যায়।
# চোখে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। যে কারণে অক্সিজেনের অভাবও দেখা দেয়।
চোখে স্ট্রোক হওয়ার লক্ষণগুলো আসলে কী?
ফ্লোটার্স
সাদা দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে থাকলেও মনে হতে পারে তার গায়ে যেনো ধূসর ধূলিকণা ঘুরে বেড়াচ্ছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটিকে বলা হয় ‘ফ্লোটার্স’।
ঝাপসা দৃষ্টি
অনেক সময় চোখে স্ট্রোক হলেও দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যেতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে চোখের নির্দিষ্ট একটি অংশ ঝাপসা হয়ে যেতেই পারে। আবার কারও ক্ষেত্রে পুরো দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যায়। পরিস্থিতি জটিল হলেও দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা থাকে।
চোখের অতিরিক্ত চাপ
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চোখে স্ট্রোক হলে সেটি রোগী বুঝতেও পারেন না। কারণ হলো চোখের মধ্যে বিশেষ কোনও কষ্ট কিংবা যন্ত্রণাও হয় না। তবে, চোখের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হতে পারে। একটু সচেতন থাকলে ওই অস্বস্তি টের পাওয়া যায়। অনেক সময় রক্তনালি ছিঁড়ে গিয়ে রেটিনা উপর তা ছড়িয়েও পড়ে। তখন চোখ রক্তবর্ণ হয়ে যায়।
চোখের স্ট্রোক কী প্রতিরোধ করা সম্ভব?
# নিয়মিত প্রাণায়াম করলে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে। যে কারণে চোখের উপরেও চাপ অনেক কম পড়ে। চোখের স্ট্রোক এড়ানোর একটি অন্যতম পন্থায় হলো প্রাণায়াম। কারণ হলো যাদের ডায়াবেটিস অতিরিক্ত থাকে তাদের চোখের এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
# চোখ ভালো রাখতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ বাদাম এবং বীজ খাওয়া দরকার। সঙ্গে যদি কিশমিশ, শুকনো ডুমুর খাওয়া যায় তা হলে আরও ভালো হয়।
# প্রতিদিনের ডায়েটে বিটা-ক্যারোটিন যুক্ত খাবার যেমন- গাজর, পালং শাক, মিষ্টি আলু, ব্রকলি, স্ট্রবেরি রাখা যেতেই পারে। একান্ত না পারলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্টও খেতে পারেন।
# চোখে সরাসরি রোদ লাগলে অনেক সময় সেখান থেকে ক্ষতি হতে পারে। তাই রোদ থেকে চোখ দু’টি বাঁচিয়ে রাখতে রোদচশমা ব্যবহার করার পরামর্শও দেওয়া হয়ে থাকে। তবে, সস্তার রোদচশমা পরলে আবার হিতে বিপরীতও হতে পারে। তাই সেই বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।
# চোখকে পর্যাপ্ত সময় বিশ্রাম দিতে হবে। দিনের যেটুকু সময় চোখ দু’টিকে কাজ না করালেই নয়, কেবলমাত্র সেইটুকু সময় ছাড়া বাকি সময় চোখ বন্ধ করে রাখতে পারলে ভালো। প্রয়োজনে চোখের হালকা কিছু ব্যায়ামও করা যেতে পারে। বাজার থেকে উন্নতমানের ‘আইমাস্ক’ কিনে মাখতে পারেন। না হলে ঘরোয়া টোটকা হিসেবে দিনের শেষে চোখের উপর দু’টুকরো শসা রাখলেও কাজ হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on মে ২৬, ২০২৪ 5:10 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শীতকালে চামড়ায় টান ধরা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে সমস্যা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অসতর্কতাবশত: হাত থেকে পড়ে গেলেও ফোনের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ওজন কমাতে গিয়ে তাড়াহুড়ো করা যাবে না, কারণ তাড়াহুড়া করলেই…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের অন্যতম ওটিটি প্লাটফর্ম আইস্ক্রিনে স্ট্রিমিং হতে চলেছে সুপারস্টার শাকিব…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠের কাছ থেকে ফ্ল্যাট উপহার নেওয়া, সাংবাদিককে হুমকি…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাতিশালের মধ্যে ঘুমোচ্ছে পুচকে একটি বাচ্চা হাতি। শাবকের ঘুম ভাঙাতে…