দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের হরিয়ানা রাজ্যে এক্সপ্রেসওয়েতে চলন্ত বাসে আগুন লেগে অন্তত ৯ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতে রাজ্যটির কুন্ডলি-মানেসার-পালওয়াল এক্সপ্রেসওয়েতে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই সময় এইসব পুণ্যার্থী উত্তর প্রদেশের মথুরা এবং বৃন্দাবনে তীর্থযাত্রা সেরে ফিরছিলেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, বাসটিতে নারী এবং শিশুসহ একই পরিবারের অন্তত ৬০ জন আরোহী ছিলেন। তারা সকলেই পাঞ্জাবের বাসিন্দা। তাদের বহনকারী বাসটি হরিয়ানার নুহ এলাকার কাছে আসার পর বাসটিতে আগুন লাগে। বাসটির বেঁচে যাওয়া যাত্রীরা জানিয়েছেন যে, রাত প্রায় দেড়টার দিকে বাসের পেছন দিকে ধোঁয়ার গন্ধ পান তারা। -খবর এনডিটিভির।
এক মোটরসাইকেল চালক বাসটির পেছনদিকে আগুন দেখে বাসটিকে অনুসরণ করেন। পরে তিনি বাসটির চালকের সামনে গিয়ে তাকে সতর্ক করার পর চালক বাসটি থামিয়ে দেন।
জীবিত এক যাত্রী বলেছেন, ‘পবিত্র স্থানগুলোতে তীর্থযাত্রার জন্য আমরা ১০ দিনের জন্য ওই বাসটি ভাড়া করেছিলাম। আমরা শুক্রবার রাতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হই। রাতে ঘুমের মধ্যেই আমি ধোঁয়ার গন্ধ পাই। মোটরসাইকেল আরোহী সতর্ক করার পর চালক একপর্যায়ে বাসটি থামিয়েছেন।’
বাসটি থামার পর ততোক্ষণে সেটিতে আগুন ধরে যায়। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয় এবং আগুন নেভানোর ও লোকজনকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। দমকল কর্মীরা আসার পর আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। ঘটনায় আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাসটি পুরোপুরি পুড়ে যাওয়ার ৩ ঘণ্টা পর দমকল কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেছেন, ‘আমরা বাসের পেছনে গিয়ে জানালা ভেঙে তারপর অনেককে বের করে নিয়ে আসি, তবে ততোক্ষণে আগুন অনেক তীব্র হয়ে ওঠে। আমরা পুলিশকে খবর দিয়েছি, তবে তারা আসতে অনেক দেরি করেছে।’
আগুন লাগার কারণ বের করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org