দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই জানি নানা উপাদানের মধ্যে সোডিয়াম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় শরীরের জন্য। যা সাধারণ খাবারের মধ্য দিয়েই প্রতিদিন শরীরে প্রবেশ করে। তবে তারও নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে।
দিনের পর দিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে, তা কী আপনি জানেন? খাবারে সামান্য একটু লবণ কম হলেই অনেকের মেজাজ একেবারে সপ্তমে উঠে যায়। অনেকের আবার মাছ-মাংসের ঝোল বা তরকারিতে লবণ ঠিকঠাক হলেও পাতে কাঁচা লবণ নিয়ে খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। এমনকি, বাইরে বেরিয়ে সামান্য ফুচকা খেতে গেলেও আলুর পুরে বেশি করে লবণ মেশাতে বলেন কেও কেও। শরীরে প্রয়োজনীয় নানা উপাদনের মধ্যে সোডিয়াম অপরিহার্য এটি ঠিক। যা সাধারণ খাবারের মধ্যে দিয়েই প্রতিদিন শরীরে প্রবেশ করে। তবে তারও একটা নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। দিনের পর দিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে শরীরে কেমন প্রভাব পড়ে, তা কী জানেন?
উচ্চ রক্তচাপ
লবণ বেশি খেলে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। যা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার জন্যে অনেকাংশেই দায়ী। রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তা রক্তবাহিকার উপরেও চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। যে কারণে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও বেড়ে যেতে পারে।
কিডনির সমস্যা
শরীরে তরলের মাত্রা ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কিডনি। অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে তরলের পরিমাণ বেড়ে যায়। যে কারণে কিডনির উপর তখন চাপ পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির উপর চাপ পড়তে থাকলে তা বিকল হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাবে না।
ওয়াটার রিটেনশন
অতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে তরলের মাত্রা বাড়তে থাকে। এই অতিরিক্ত তরলই শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জমতে শুরু করে দেয়। পায়ের পাতা, গোড়ালি কিংবা হাতের বেশ কিছু অংশে ফোলা ফোলা ভাব দেখা যায়। সেখান থেকে প্রদাহও বাড়তে পারে।
পানি তেষ্টা বাড়িয়ে দেয়
অতিরিক্ত লবণ খেলে পানির তেষ্টা বেড়ে যায়। তাতে শরীরের ভালো তো নয়ই, উল্টো আরও ক্ষতির সম্ভাবনাই থাকে বেশি। শরীর ভালো রাখতে গেলে পানি খাওয়া দরকার। তবে তারও নির্দিষ্ট মাপ রয়েছে। সারাদিনে ৭ হতে ৮ গ্লাস অর্থাৎ, ৩ হতে ৪ লিটার পানি খাওয়াই যথেষ্ট বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। তার থেকে বেশি পানি খেলেই কিডনি কিংবা লিভারের মতো অঙ্গের উপর চাপও পড়তে পারে।
অস্টিয়োপোরোসিস
অতিরিক্ত লবণ খেলে হাড় ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। মাত্রাতিরিক্ত লবণ খেলে শরীরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়। হা়ড়ের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়াম প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়। যে কারণে হাড় খুব সহজেই ভঙ্গুরও হয়ে যেতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org