দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অরুণাচল প্রদেশের ভূখণ্ড নিয়ে চীন-ভারতের মধ্যে বিরোধ দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে। এই প্রদেশের ওপর নিজেদের মালিকানা দাবির অংশ হিসেবে গত এপ্রিল মাসে সেখানকার ৩০টি স্থানের নাম বদলে চীনা নাম রেখেছিল বেইজিং।
এবার তিব্বতে তার জবাব দিতে চলেছে নয়াদিল্লি। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র উদ্ধৃত করে প্রকাশিত একটি খবরে দাবি করা হয়, সেনার নয়া সংশোধিত মানচিত্রে চীন অধিকৃত তিব্বতের ৩০টি স্থানের নতুন নাম থাকবে।
নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় দফার প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্বগ্রহণের পরই চীন সরকারের ‘নামকরণ কৌশলের’ জবাব দিতে যাচ্ছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর চীন অধিকৃত তিব্বতের ৩০টি স্থানের ‘নাম বদলের’ প্রস্তাব অনুমোদন করেছে দেশটির কেন্দ্র।
২০২৩ সালের শুরুতেও চীনের বেসামরিক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ হতে অরুণাচলের ১১টি জায়গার নাম বদলে দেওয়া হয়েছিল। এর পেছনে তাদের যুক্তিও ছিল— স্থানীয় মানুষদের উচ্চারণের সুবিধার্থেই জায়গাগুলোর নাম বদলানো হয়েছে। যে ১১টি স্থানের নাম বদলানো হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে ছিল পর্বতশৃঙ্গ, নদী ও এমনকি বসতি অঞ্চল।
এই পরিস্থিতিতে তিব্বতকে হাতিয়ার করে নয়াদিল্লি আন্তর্জাতিক মঞ্চে শি জিনপিং সরকারকে চাপের মধ্যে রাখতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে।
পঞ্চাশের দশকে চেয়ারম্যান মাও জে দংয়ের নির্দেশে চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র তিব্বত দখল করেছিল। তারপরই শুরু হয় স্বাধীনতাকামী তিব্বতিদের উপর দমনপীড়ন। পরবর্তী সময় চীনা অত্যাচারের আশঙ্কায় কয়েক লাখ অনুগামীসহ ভারতে চলে এসেছিলেন তিব্বতি বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু দলাই হলো লামা। এক সময় ভারত তাকে আশ্রয় দিয়েছিল। গত ছ’দশক ধরে তিব্বতের স্বাধীনতার দাবিতে বিশ্ব জুড়ে প্রচার করে চলেছেন দলাই অনুসারী বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। চীনা দখলদারির প্রতিবাদে তারা আন্দোলন চালাচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org