বিজ্ঞানীদের গবেষণা: শুধু জেনেটিক কারণই নয় পৃথিবীর শেষ ম্যামথের অন্যকোনো মৃত্যুরহস্যও রয়েছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই গ্রহের শেষ জীবিত পশমি ম্যামথ গোষ্ঠী একটি এলোমেলো ও আকস্মিক রহস্যময় ঘটনায় মারা গিয়ে বিলুপ্ত ঘটে। এক নতুন গবেষণায় এমন তথ্যই প্রকাশিত হয়েছে।

বর্তমান উত্তর রাশিয়ার সায়বেরিয়ার র‍্যাঙ্গেল দ্বীপে ৬ হাজার বছর ধরে বাকি বিশ্ব হতে একেবারে বিচ্ছিন্ন ছিল এই ম্যামথ গোষ্ঠী। এরা জেনেটিক ইনব্রিডিংয়ের মাধ্যমে ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে বলেই আগে বিশ্বাস করা হতো।

স্টকহোমের সেন্টার ফর প্যালিওজেনেটিক্সের বিবর্তনীয় জিনতত্ত্ববিদ এবং নতুন এক গবেষণার জ্যেষ্ঠ লেখক লাভ ডালেন এক বিবৃতিতে বলেন, আমরা বর্তমানে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করতে পারি যে, সংখ্যাগতভাবে ম্যামথ খুব কমই ছিল ও জেনেটিক কারণে তারা বিলুপ্ত হয়ে যায়। সম্ভবত তখন কিছু এলোমেলো ঘটনা ঘটেছিল, এতে তারা হত্যার শিকার হয়। যদি সেই এলোমেলো ঘটনাটি নাই ঘটতো, তাহলে আজও ম্যামথ এই গ্রহেই থাকতো।

Related Post

প্রায় ৩ লাখ হতে ১০ হাজার বছর আগে গভীর উলযুক্ত ম্যামথগুলো ইউরোপ, এশিয়া ও উত্তর আমেরিকার হিমশীতল সমভূমিতে ঘুরে বেড়াতো। উত্তরাঞ্চলজুড়ে বরফ গলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বেঁচে থাকার খাবারও আস্তে আস্তে অদৃশ্য হয়ে যেতে লাগলো। যে কারণে তাদের চলাফেরার পরিসীমাও সঙ্কুচিত হয়ে গিয়েছিলো।

এই সময়সীমার মধ্যেই সাইবেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম উপকূলে বরফ অতিক্রম করে ম্যামথের একটি ছোট দল র‍্যাঙ্গেল দ্বীপে বসবাস শুরু করেছিলো। প্রায় ১০ হাজার বছর পূর্বে বরফ অতিক্রম করার জায়গাটিও অদৃশ্য হয়ে গেলে মূল ভূখণ্ডের জনসংখ্যা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে ম্যামথের ছোট ওই দলটি। হিমশীতল দ্বীপে নির্জনভাবেই ম্যামথগুলো আরও ৬ হজার বছর বেঁচে ছিল।

নতুন গবেষণায় র‍্যাঙ্গেল আইল্যান্ডের পরিণতি খতিয়ে দেখার জন্য গবেষকরা ২১টি ম্যামথের জিনোম বিশ্লেষণ করতে হাড় ও দাঁত থেকে প্রাপ্ত ডিএনএ ব্যবহার করেন। তারা দেখতে পান যে, দ্বীপের পশমী ম্যামথগুলোর মধ্যে ইনব্রিডিং ও কম জিনগত বৈচিত্র্যের লক্ষণ দেখা যায়।

গবেষকরা বলেছেন যে, তবে শেষ পর্যন্ত আসলে প্রাণীগুলোর ভাগ্যে কী ঘটে, তা এখনও কিছুটা হলেও রহস্যজনক। আরও তদন্তের জন্য তারা র‍্যাঙ্গেল দ্বীপে শেষ ৩০০ বছরের অনাবিষ্কৃত ম্যামথ জীবাশ্মের সূত্রও সন্ধান করবেন। তাদের অনুসন্ধানগুলো চলমান বৈচিত্র্যময় সংকট বোঝার জন্য খুবই দরকারি বলে তারা মনে করেন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুন ৩০, ২০২৪ 1:03 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার গুঞ্জন নাকচ করলেন বাইডেন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর যে…

% দিন আগে

আমেরিকায় স্কলারশিপের জন্য জীবিত বাবাকে মৃত বানিয়েছেন এক শিক্ষার্থী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফুল ফান্ডেড স্কলারশিপ পেতে জাল নথি ব্যবহারের অভিযোগে…

% দিন আগে

নদী ও নৌকা এই বর্ষার এক প্রকৃত রূপ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ২০ আষাঢ় ১৪৩১…

% দিন আগে

জীবনযাপনে কিছু বদল আনলে উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ হতে দূরে থাকা যাবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উচ্চ রক্তচাপ এখন কিন্তু কেবল বয়স্কদের অসুখ নয়। এই অসুখে…

% দিন আগে

বর্ষাতে যদি পেটখারাপ বা জ্বর-সর্দি চেপে ধরে তাহলে কী করবেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি যতো সাবধানেই চলুন না কেনো, বর্ষাকালে এক-আধটু পেট খারাপ,…

% দিন আগে

কলড্রপ ইস্যুতে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কলড্রপ ইস্যুতে গ্রামীণফোনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করলো বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ…

% দিন আগে