দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি কী জীবনে পরিবর্তন আনতে চাইছেন? দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ থেকে রেহাই পেতে চাইছেন? তাহলে নিজের কিছু বিষয় খেয়াল করুন আজ থেকে। এর মাধ্যমে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান হতে পারে।
জীবনকে নিজের ইচ্ছামতো পরিবর্তন করার শক্তিও আসবে ছোট ছোট পদক্ষেপ থেকেই। এমনটি মনে করেন মনোবিদরা। প্রকৃতপক্ষে জীবন এক ঢালে চলে না। নদীর মতোই তাতে অনেক বাঁকও আসে। কখনও সুখ- আবার কখনও দুঃখ। কখনও আনন্দ- আবার কখনও আসে হতাশা।
আবার আচমকা এমন ঝড়ও বয়ে যায়, যা দিশেহারা করে দিতে পারে। তবে সব ঝড়ঝাপটা সামলেও মানুষ তার অভ্যাস, সিদ্ধান্ত, ইচ্ছাশক্তি ও পরিশ্রম দিয়ে সমস্ত বেয়াড়া সময়কে সামলে নিয়ে আবারও এগিয়ে যেতে পারে।
জীবন কতটা সুন্দর হবে সেটি নির্ভর করে মানুষের অভ্যাস এবং তার সঠিক পদক্ষেপের উপরে। এখন দেখে নিন কী কী অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে এক মাসের মধ্যেই নিজেকে আমূল বদলে ফেলা যাবে। নিজের জীবনকে সুন্দর করে গড়েপিঠে নেওয়া যাবে।
মেলামেশা বাড়াতে হবে
আপনাকে কেও পাত্তা দিচ্ছে না কিংবা ডাকে সাড়াও দিচ্ছে না, এইসব ভেবে দমে গেলে কিন্তু চলবে না। চেষ্টা করতে হবে মেলামেশা বাড়ানোর জন্য। পারলে অচেনা মানুষদের সঙ্গেও আলাপ পরিচয় করুন। দেখবেন যে, ধীরে ধীরে মানুষের সঙ্গে মিশে গিয়ে কাজ করার ক্ষমতা আরও বাড়ছে। লজ্জা, সঙ্কোচ, দ্বিধা কিংবা দ্বন্দ্ব কাটছে। কাজেকর্মেও অনেক বেশি উৎসাহী হয়ে উঠতে পারছেন।
রোজনামচা লিখে রাখুন
বর্তমান সময়ে লেখা অনেকেরই আসে না। সবাই লেখকও নন। তবে নিজের মনের কথা সহজ ভাষায় লেখা যেতেই পারে। ডায়েরি লেখার অভ্যাস থাকলে খুবই ভালো। আর না থাকলে, অভ্যাস করুন রোজনামচা লেখা। কাজে যদি প্রশংসা পান তাও লিখুন, হতাশা এলেও লিখে রাখতে হবে। নিজের দরকারি কথা, পেশা সংক্রান্ত বিষয় কিংবা পরিবারের কথা, যাই হোক না কেনো, কয়েক লাইন লেখার অভ্যাস মনঃসংযোগ আরও বাড়াবে।
লক্ষ্য স্থির করুন
আপনার লক্ষ্য স্থির না করলে জীবনে কখনও উন্নতি হবে না। একটা লক্ষ্য ধরেই আপনাকে এগিয়ে যেতে হবে। সেই মতো প্রতি দিনের কাজও গোছাতে হবে। কোনও কাজই কাল করবো বলে ফেলে রাখা যাবে না। কাজ শেষ করার অভ্যাস করতে হবে। কোন কাজটির গুরুত্ব বেশি, সেটি আপনাকে নিজেকেই ঠিক করতে হবে। সময় নষ্ট করার বদলে গুরুত্ব বিচার করে কাজকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে করতে হবে। তা হলেই লক্ষ্যের পথ আরও মসৃণ হবে।
দায়িত্ব নিতে হবে
নিজে থেকেই এগিয়ে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে। মনোবিদরা বলেন, দায়িত্ব নিয়ে কোনও কাজ করার অভ্যাস তৈরি হলে আত্মবিশ্বাসও তখন বাড়ে।
হঠকারিতা মোটেও ভালো নয়
ভালো খবর হোক কিংবা খারাপ, শোনার সঙ্গে সঙ্গেই উত্তেজিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া মোটেও ঠিক নয়। হঠকারিতা ভুল পথে ঠেলে দিতে পারে। ধীরে সুস্থে মাথা ঠান্ডা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
অনুকরণ নয়
পেশা ও ব্যক্তিগত জীবনকে আলাদা রাখতে হবে। প্রতিদিন আমাদের চারপাশে যারা থাকেন, তাদের প্রভাব মনে ছাপ রাখে। তবে কাওকে অনুকরণ করলে কখনওই নিজের প্রত্যাশা পূরণ হবে না। যে কারণে এক সময় হতাশা, অবসাদ ঘিরে ধরতে পারে। মানসিক চাপও তখন বাড়ে।
‘না’ বলার অভ্যাস রপ্ত করুন
জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে, যেখানে ‘না’ বলাটাই হয়তো বাঞ্ছনীয় ছিলো। সবেতেই ‘হ্যাঁ’ বলে মাথা নাড়লে বেশ মুশকিল। সম্পর্কই হোক কিংবা প্রতিদিনের কাজই হোক, গুরুত্ব বুঝে তার সিদ্ধান্তও নিতে হবে।
নিজের চাহিদার খেয়াল রাখতে হবে
ব্যস্ততা যতই থাক না কেনো, নিজের ছোট ছোট চাহিদার দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। সঠিক সময় খাওয়া, সঠিক সময় ঘুমুতে যাওয়া। শরীরচর্চার অভ্যাস থাকলে তারজন্য সময় বের করাটা জরুরি। নিজের শখ কিংবা ভালো লাগার কাজ করাটাও অত্যন্ত জরুরি। রোজের ব্যস্ততায় নিজের ভালো লাগার কাজগুলো না করলে একঘেয়েমি আসবে অল্প দিনে। দুশ্চিন্তাও ভোগাবে।
নিজেকে প্রশ্ন করুন
সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিন নিজেকে এই প্রশ্নটি করুন, “আজ কীভাবে নিজের জীবনে বদল আনবেন?” এই অভ্যাস তৈরি হলে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। প্রতিদিন যদি নতুন নতুন কাজে নিজেকে চমকে দেওয়া যায়, তাহলেই বুঝবেন যে, লক্ষ্যের পথে অনেকটা এগিয়ে যাচ্ছেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org