দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি যতো সাবধানেই চলুন না কেনো, বর্ষাকালে এক-আধটু পেট খারাপ, সর্দি-কাশি হতেই পারে। তবে এই ধরনের উপসর্গ পানি বা ব্যাক্টেরিয়াজনিত রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায়।
বর্ষাকাল মানে খিচুড়ি ও ইলিশ! এছাড়া কোনও কারণ নেই এই ঋতুর প্রতি দরদ দেখানোর। গরম থেকে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া গেলেও রাস্তার জমা পানি, প্যাচপেচে কাদার অস্বস্তি নিয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে কেওই বিশেষ ভালোবাসেন না। তার উপর এই সময় নানা ধরনের রোগের প্রকোপ দেখা দেয়। টাইফয়েড, হেপাটাইটিস, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুর মতো নানা ধরনের রোগ এই সময় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। সেইসঙ্গে থাকে পেট খারাপ, অ্যালার্জিজনিত সর্দি-কাশি। এই ধরনের সমস্যা এড়িয়ে চলতে কী কী সতর্কতা নেওয়াটা জরুরি? জানিয়েছেন চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস।
বর্ষার এই স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় পানবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দেয়। অনেক জায়াগাতেই পানি জমে পুকুরঘাট, নদীনালার পানিস্তর এক হয়ে যায়। অনেক জায়গায় খাওয়ার পানির পাইপের মধ্যে রাস্তার নোংরা জমা পানি মিশে একাকার হয়ে যায়। এই বিষয়ে চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, “এই ক্ষেত্রে সেই আবার পুরনো পন্থায় ফিরে যাওয়ায় সবচেয়ে নিরাপদ। অর্থাৎ পানি ফুটিয়ে পান করা। পানি ফুটিয়ে নিলে শিশু থেকে বয়স্ক সকলেই ডায়েরিয়া কিংবা ব্যাক্টেরিয়া সংক্রান্ত সমস্যা এড়িয়ে চলতে পারবেন। আবার বাইরে বের হলে অবশ্যই পানি কিনে খেতে হবে।” জ্বর বা পেটের কোনও সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে মুঠো মুঠো অ্যান্টিবায়োটিক খেলে বিপদে পড়তে পারেন। পেটের রোগ থেকে বাঁচতে হলে খাবারের বিষয়েও সচেতন থাকা বিশেষ প্রয়োজন। তাছাড়া এই সময় অতিরিক্ত তেলমশলা দেওয়া খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। বাইরের খাবার খেলেও পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন চিকিৎসক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হলে ফলমূল, শাকসব্জি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদেরা। বর্ষাকালে আবার এই ফলমূল কিংবা শাকসব্জিই রোগজীবাণুর আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে। সেই ক্ষেত্রে কী করণীয়? গবেষক ও পুষ্টিবিদ উদয়ন ভট্টাচার্য বলেছেন, “রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া কাটা ফল একেবারেই খাওয়া চলবে না। পানিতে জন্মায় এমন শাকসব্জি এড়িয়ে চলতে পারলেই ভালো হয়। সম্ভব হলে এক চিমটে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে শাকসব্জি ভিজিয়েও রাখতে পারেন। কিছুক্ষণ পর আবার পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে, তারপর ভালো করে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে।”
বর্ষার জমা পানি মশার আঁতুড়ঘর। বাড়ির আশপাশে পানি জমার জায়গা থাকলে সেখানেও মশারা বংশবিস্তার করতে পারে। ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া কিংবা চিকনগুনিয়ার মতো রোগের বাড়বাড়ন্তও দেখা দেয় এই সময়। অরিন্দমের ভাষায়, “মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচতে মশারি ব্যবহার করতে হবে। রাসায়নিক স্প্রে কিংবা ধূপ ব্যবহার করার পরামর্শও আমরা দিই না। কারণ হলো, অনেকেরই এতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তার চেয়ে বরং মশা তাড়ানোর তেল কিংবা ক্রিম ব্যবহার করাই ভালো।”
বর্ষার পানি গায়ে লাগলে জ্বর-সর্দি, ঠান্ডা লাগার মতো সমস্যাও খুব সাধারণ একটি বিষয়। অনেকের বৃষ্টির পানি গায়ে পড়লে ত্বকে অ্যালার্জিও হয়। এর থেকে বাঁচার উপায় লম্বাহাতা জামা বা ট্রাউজ়ার্স পরা। ভিজে পোশাক কিংবা অন্তর্বাস পরেও অনেক সময় ঠাণ্ডা লাগতে পারে। হতে পারে ছত্রাকঘটিত সংক্রমণও। এই বিষয়েও সতর্ক থাকা দরকার এবং। প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on জুলাই ২, ২০২৪ 2:16 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইসলামিক সঙ্গীত জগতে এক নয়াদিগন্তের সূচনা করলেন হোসাইন নূর। তার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দু’টি কচ্ছপ নিয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছেন এক তরুণী। কচ্ছপ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ৭ পৌষ ১৪৩১…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিটনেস প্রশিক্ষকরা বলেছেন, হাঁটাহাঁটি, দৌড়ানো, জগিং, সাইকেল চালানো কিংবা সাঁতার…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রায় একযুগেরও বেশি সময় পর মৌলিক গান নিয়ে মিউজিক ডোমেইনে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১৯৫১ সালের নভেম্বর মাসে বিয়ে হয় ফে ও রবার্টের। বিয়ের…