ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পর বর্ষাকালে পায়ের যত্ন না নিলেই বিপদে ঘটতে পারে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্ষার এই সময় ডায়াবেটিকদের পায়ের যত্নে বাড়তি মনোযোগও দিতে হবে। বৃষ্টির অর্থই হলো জলকাদা। সব সময় বাড়ি বসে থাকাও কিন্তু সম্ভব নয়। পায়ের যত্ন না নিলে মুশকিলে পড়তে হতে পারে বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের। তাহলে পায়ের যত্ন নেবেন কীভাবে?

ত্বকের যত্নে যতোটা মনোযোগ দেওয়া হয়, ডায়াবেটিস থাকলে ঠিক সেভাবেই পায়ের যত্ন নিতে হবে মন দিয়ে। শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে না থাকলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের মতো পায়ের উপরেও পড়তে পারে প্রভাব। অল্প দিনেই স্নায়ু কমজোর হয়ে পায়ের সাড় কমেও যেতে পারে। চিকিৎসকদের পরিভাষায় এই অসুখটিকে বলে ‘ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি’। বিশেষ করে এই বর্ষায় ডায়াবেটিক রোগীদের পায়ের যত্নে বাড়তি মনোযোগও দিতে হবে।

# ডায়াবেটিস থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে। বর্ষা মানেই পায়ে ছত্রাকের সংক্রমণ কমবেশি হয় অনেকের ক্ষেত্রেই। এই সমস্যা থেকে রেহাই পেতে বাইরে থেকে ফিরে সব সময় ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে পা ধোয়া জরুরি। কম ক্ষারযুক্ত সাবান দিয়ে পা ধুয়ে নিতে হবে। ধোয়ার পর পা শুকনো করে মুছে নিতে হবে। বিশেষ করে গোড়ালির অংশ যেনো কখনও ভিজে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ এতে ছত্রাকের সংক্রমণ বাড়তে পারে।

Related Post

# বর্ষায় এমনিতেও আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি বলে হাত-পা খুব তাড়াতাড়ি শুষ্ক হয়ে যায়। টান ধরতে থাকে ত্বকে। ডায়াবেটিকদের জন্য বেশি শুষ্কতাও ভালো নয়। তাই ময়েশ্চারাইজ়ার ব্যবহার করতে হবে। পায়ের আঙুল ও গোড়ালিতে ভালো করে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখতে হবে।

# বাড়িতে থাকলেও কখনও ভুলেও খালি পায়ে হাঁটবেন না। কারণ হলো, পায়ের সাড় কমে যায় বলে কোনওভাবে কেটে গেলে বা ফোস্কা পড়লে টেরই পাবেন না। সেখানে ময়লা ঢুকে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

# বর্ষায় সপ্তাহে ১৫ দিন অন্তর পেডিকিয়োর করাটা জরুরি। তবে পার্লারে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে পেডিকিয়োর করা হয়ে থাকে। ডায়াবেটিকদের জন্য সেটা এড়িয়ে চলাই ভালো। তার চেয়ে বাড়িতে শ্যাম্পু, গরম পানি দিয়ে পেডিকিয়োর করেও নিতে পারেন।

# ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করে থাকেন। বর্ষায় সেই অভ্যাসে রাশ টানার কোনো প্রয়োজন নেই। তবে পা ঢাকা জুতো না পরে খোলামেলা জুতো পরাই ভালো। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুলাই ৪, ২০২৪ 5:13 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

পুষ্টিবিদরা যা বলেন: সুজি খাওয়া উপকারী নাকি ক্ষতিকর?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অনেকই সুজি খেতে খুবই ভালোবাসেন। তাই তারা প্রতিদিন সুজির পায়েস,…

% দিন আগে

বাংলা এবং হিন্দিতে ‘দরদ’-এর ট্রেলার ও গান প্রকাশ [ট্রেলার]

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথমবারের মতো প্যান ইন্ডিয়ান চলচ্চিত্র বানিয়েছেন নির্মাতা অনন্য মামুন। ঢালিউড…

% দিন আগে

মুরগির লেগপিস প্রতিদিন খাওয়া কী ভালো?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনার যদি প্রতিদিন চিকেন খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তাহলে জেনে রাখুন,…

% দিন আগে

উপদেষ্টা নাহিদকে নিয়ে নানা অপপ্রচার: সাবধান করেছেন সমন্বয়ক মাসউদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’- এর অন্যতম সমন্বয়ক…

% দিন আগে

ইলন মাস্ককে এক লাখ সরকারি চাকরি বাতিলের দায়িত্ব দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নবনিযুক্ত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিশ্রুতি দেন…

% দিন আগে

গোল্ডেন আউল: ৩১ বছর ধরে চলা গুপ্তধন অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটলো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ অবশেষে গত ৩১ বছর ধরে চলা ‘গোল্ডেন আউল’ বিতর্কের অবসান…

% দিন আগে