দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক রেলওয়ে কর্মী রাতের খাবার খেয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন। এই সময় হঠাৎদ করেই একটি সাপ তাকে কামড়ে দেয়। কী করবেন সেটি বুঝতে না পেরে আক্রমণকারী সাপকেই পাল্টা দু’বার কামড়ে দেন ওই রেলকর্মী!
জীবন-মৃত্যুর এই লড়াইয়ে ওই রেলওয়ে কর্মী বেঁচে গেলেও মৃত্যু ঘটেছে সাপটির! চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি সম্প্রতি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। গত ৫ জুলাই এক প্রতিবেদনে এই তথ্য দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভুক্তভোগী ওই রেলকর্মীর নাম সন্তোষ লোহার। ৩৫ বছর বয়সী সন্তোষ বিহারের নওয়াদার রাজৌলির একজন রেল কর্মচারী ও তিনি রাজৌলির ঘন জঙ্গলে রেললাইন স্থাপনকারী একটি দলের কর্মী।
গত মঙ্গলবার (২ জুলাই) রাতে খাবার খাওয়ার পর ঘুমানোর সময় তাকে একটি সাপ কামড়ে দেয়। এতো রাতে জঙ্গলের মধ্যে সাপের কামড় খেয়ে কী করবেন তিনি বুঝতে না পেরে দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে সাপটিকেই ধরে দু’বার কামড়ে দেন সন্তোষ।
তার মাথায় তখন একটি জিনিসই ঘুরপাক খাচ্ছিল, সেটি হচ্ছে- তার এলাকায় স্থানীয় লোকরা বিশ্বাস করেন- কামড় দেওয়া সাপকে পাল্টা কামড়ে দিলে বিষের ক্ষতিকর প্রভাবকে নাকি উল্টে দেওয়া সম্ভব। অলৌকিকভাবে, সন্তোষ এই অগ্নিপরীক্ষায় বেঁচে গেছেন।
এরপর সহকর্মীরা তাকে দ্রুত রাজৌলি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে ডা. সতীশ চন্দ্র সিনহা তাকে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর দ্রুতই চিকিৎসায় সাড়া দেন সন্তোষ। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ায় পরের দিন সকালেই চিকিৎসকরা ছেড়ে দেন ওই রেলওয়ে কর্মীকে।
ডা. সিনহাও নিশ্চিত করেছেন যে, সন্তোষ চিকিৎসায় ভালোভাবে সাড়া দিয়েছেন ও পরের দিন সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অবশ্য সাপের কামড় খেয়ে সন্তোষ প্রাণে বাঁচলেও, বাঁচেনি ওই সাপটি। মানুষের কামড় খেয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই সাপের!
উল্লেখ্য, এই ঘটনাটি সাপের কামড়কে কেন্দ্র করে ওই অঞ্চলে প্রচলিত লোককাহিনীর কথা উঠে এসেছে। সেখানে স্থানীয়দের মধ্যে বিশ্বাস যে, কামড় দেওয়া সাপকে উল্টো কামড়ানোর কারণে বিষের মারাত্মক প্রভাব সাপের মধ্যে ফেরত যায়।
রেলওয়ে কর্মী সন্তোষ লোহারের ক্ষেত্রেও হয়তো তেমন কিছুই ঘটেছে বলে মনে করছেন অনেকেই!
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org