দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চোর চুরি করে পালাবে সেটিই স্বাভাবিক। তবে এবার এক ব্যতিক্রমি চোর চুরি করার পর ক্ষমা চেয়ে এক চিঠি লিখে গেছে! চোর তার চিঠিতে চুরি করার কারণও উল্লেখ করেছে।
ওই চোর তার চিঠিতে লিখেছে- বাড়িতে অসুস্থ আমার প্রিয়জন। চিকিৎসা করাতে গিয়ে ফুরিয়ে গেছে শেষ সম্বলটুকুও। তাই অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়েই এই চৌর্যবৃত্তি। তবে পরের ধন হাতিয়ে চম্পট নয়, বরং সর্বস্বান্তদের কাছেই ঠিক এভাবে চিঠি লিখে গেলেন চোর। নিজের করুণ অবস্থার কথা বর্ণনা করে আশ্বাস দিয়ে গেলেন যে, ঠিক সময় চুরির সব টাকায় তিনি ফেরত দিয়ে যাবেন। আজব এই চুরির তদন্তে নেমে অবাক হয়েছে পুলিশ।
দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এক খবরে জানিয়েছে, এই আজব ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের তুতিকোরিনে। জানা যায়, সম্প্রতি ৭৯ বছর বয়সী চিথিরাই সেলভিনের বাড়িতে চুরি হয়ে যায়। সেলভিন এবং তার স্ত্রী, দু’জনেই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। তাদের চার সন্তানও রয়েছে। তবে ওই বাড়িতেই থাকেন বৃদ্ধ দম্পতি। তাদের দৈনন্দিন কাজে সাহায্য করার জন্য বাড়িতে আসতেন এক পরিচারিকা।
পুলিশ সূত্রে বলা হয়, গত ১৭ জুন চেন্নাইয়ে ছেলের বাড়িতে যাবেন বলে নিজের বাড়ি তালা দিয়ে বেরিয়ে যান সেলভিন দম্পতি। এরপর ২ জুলাই সেলভিনের বাড়িতে যান গৃহ পরিচারিকা। সেখানে গিয়েই দেখেন, দরজার তালা ভাঙা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পুলিশে খবর দেন।
পুলিশ এসে দেখে যে, ঘর থেকে বহু জিনিস উধাও। সেলভিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় যে, চুরি গেছে অন্তত ৬০ হাজার টাকার সামগ্রী। সেই সঙ্গেখোয়া গেছে দুই জোড়া সোনার কানের দুল, রুপার নুপূরও।
চুরি যাওয়া জিনিসের সন্ধান করতে গিয়ে একটি চিঠির খাম দেখতে পান কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। খামের ভিতর থাকা চিঠিতে সবুজ রঙের কালিতে লেখা রয়েছে, আমাকে ক্ষমা করবেন, আসলে আমার বাড়িতে একজন গুরুতর অসুস্থ। তার চিকিৎসা করাতে বাধ্য হয়েই চুরি করেছি। টাকাসহ চুরি করা সব কিছু এক মাসের মধ্যে ফেরত দিয়ে দেবো।
তামিল ভাষায় লেখা ওই চিঠি দেখে পুলিশের অনুমান যে, হয়তো চিকিৎসা করাতে গিয়েই সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন ওই চোর। তাই এমন অসাধু উপায়ে উপার্জনের চেষ্টা করেছেন। যদিও এই ঘটনায় এ পর্যন্ত কোনো সন্দেহভাজনকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org