দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের অনেকের জানা তুলসীপাতায় নানা ধরনের গুণ রয়েছে। আগে তুলসীপাতা খাওয়া হলেও এখন সে অভ্যাস ছেড়ে দিয়েছেন অনেকেই। অথচ যদি দিন শুরু করা যায় তুলসীপাতার চা খেয়ে, তাহলে নানাভাবে উপকার হবে শরীরের।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখা যায়, কখনও আকাশের মুখভার, দফায় দফায় বৃষ্টি, এই রোদ এই বৃষ্টি। কখনও আবার ঝলমলে রোদ দেখা যায়। প্যাচপেচে কাদা ও জলমগ্ন রাস্তা বাদ দিলে বর্ষা অনেকেরই প্রিয় ঋতু। তবে এই মৌসুমে সংক্রমণের ভয় বেশিই থাকে। একটু অনিয়ম হলেই নানা রকম শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। তাই সতর্ক থাকাটা জরুরি। বর্ষায় সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে তুলসীপাতার উপরেও ভরসা রাখতে পারেন। তাছাড়াও তুলসীপাতায় নানা ধরনের গুণ রয়েছে। যদি দিন শুরু করা যায় তুলসীপাতার চা খেয়ে, তাহলে নানাভাবে উপকার হবে শরীরের। স্বাদে কষা হলেও কেনো খেতে হবে এই পাতার চা?
রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে
তুলসী চা নিয়ম করে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তিও বৃদ্ধি পায়। বর্ষাকালে ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণ থেকে রেহাই পেতে নিয়মিত এই তুলসী চায়ে চুমুক দিতে পারেন।
হজমে সাহায্য করে
হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এই তুলসী। নিয়ম করে তুলসী চা খেলে গ্যাস-অম্বলের সমস্যা থেকেও রেহাই পেতে পারেন। বর্ষাকালে ভাজাভুজি এবং বাইরের খাবারের প্রতি ঝোঁক বাড়ে, তাই হজমের জন্য এই টোটকায় ভরসা রাখতেই পারেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে
অনেকেই হয়তো জানেনই না যে, তুলসীপাতা খেলে ওজন আরও কমে। তুলসীপাতার মধ্যে এমন গুণ রয়েছে, যা হজমের প্রক্রিয়া আরও দ্রুত করে। যে কারণে ওজন কমতে পারে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে।
ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করে
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, তুলসীপাতায় থাকা যৌগগুলো রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। তুলসীতে থাকা বিভিন্ন উপাদান ইনসুলিনের ক্ষরণ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে। তাই ডায়াবেটিক রোগীরা নিয়ম করে তুলসীপাতা খেতে পারেন।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করে
তুলসীপাতা মুখগহ্বরের জীবাণু তাড়াতেও সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে কয়েকটি তুলসীপাতা চিবিয়ে খেলে মুখের ক্ষতিকর ব্যাক্টিরিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে। তাতেই কমে যাবে মুখের দুর্গন্ধ।
ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
সর্দি-কাশি বাড়লে অনেক সময় তুলসীপাতা খেতে বলেন চিকিৎসকরা। এই পাতায় এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যাতে রয়েছে ফুসফুসের স্বাস্থ্যরক্ষা করার ক্ষমতাও। ব্রঙ্কাইটিসের মতো রোগ দূরে রাখে এই তুলসীপাতা।
ত্বকের জন্যও উপকারী
অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর তুলসীপাতা। তাই নিয়ম করে তুলসীপাতার চা খেলে ত্বকে বয়সের ছাপও ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। যাদের ব্রণের সমস্যা রয়েছে, তুলসীপাতা নিয়মিত খেলে তারাও উপকার পাবেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org