ভিপিএন ব্যবহারের যেসব ঝুঁকি রয়েছে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের ইন্টারনেট বন্ধ থাকার পর আবার চালু হয়েছে। কিন্তু এই ইন্টারনেট চালু হলেও ফেসবুক এখনও বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আর ফেসবুকসহ সব অনলাইন মাধ্যম খোলার একটি সহজ সমাধান ভিপিএন। কিন্তু এই ভিপিএন ব্যবহার কতোটা ঝুঁকিপূর্ণ তা আমরা কেও জানি না।

ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন ইন্টারনেটের একটি ভার্চুয়াল) মূলত ‘টানেল’ যার মাধ্যমে ডাটা কম্পিউটার থেকে আদান প্রদান করা সম্ভব। এই ভার্চুয়াল কাল্পনিক সুড়ঙ্গটির মাধ্যমে একটি ভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত প্রাইভেট নেটওয়ার্ক এর সঙ্গে ডিভাইসকে সংযুক্ত করে ফেলা সম্ভব। এতে করে কোন পাবলিক নেটওয়ার্কের আওতাধীন থেকেও ইন্টারনেট ব্যবহারকালীন কোন প্রাইভেট নেটওয়ার্ক ব্যবহারের যে সকল সুবিধা রয়েছে, সেই সকল সুবিধাই পাওয়া সম্ভব।

ব্যবহারকারীর প্রাইভেসি সুরক্ষা, নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং কনটেন্টে প্রবেশের ক্ষেত্রে ভিপিএন-এ অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। তবে এই সুবিধার পাশাপাশি খেয়াল রাখা দরকার এর অসুবিধা কিংবা ঝুঁকি আসলে কতোটুকু।

Related Post

সাইবার নিরাপত্তা

ভিপিএন’র প্রাথমিক কথায় হচ্ছে ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন রাখা। ফলে, কোনো কারণে ব্যবহারকারীর ক্রেডেনশিয়াল কিংবা পরিচয় শনাক্তকরণ তথ্যাদি, ধরা যাক ইউজারনেইম এবং পাসওয়ার্ড অন্য কেও পেয়ে গেলে সেগুলোর অপব্যবহার করে তৃতীয় কেও তার অ্যাকাউন্টও হাতিয়ে নিতে পারে। সহজ ভাষায় বলা যায়, হ্যাকারের হাতে ভিপিএন ব্যবহারকারীর তথ্য চলে গেলে হ্যাকিং অনেক সহজ হয়ে যাবে।

ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া

ভিপিএন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে সাধারণ অসুবিধায় হলো ইন্টারনেট সংযোগের গতি কমে যাওয়া। যেহেতু ভিপিএন বিভিন্ন দুর্গম সার্ভারের মধ্যদিয়ে ডেটা পাঠায় এবং ডেটা ট্রান্সমিশন এনক্রিপ্ট করে, সেহেতু ব্রাউজিংয়ের সময় কম গতি এবং বিলম্বের মতো অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে পারেন এর ব্যবহারকারী। বিশেষ করে এমন সার্ভারের ক্ষেত্রে, যেগুলোর ব্যবহারকারীর অবস্থান থেকে অনেকটা দূরে।

খরচের বিষয়

অনেক ভিপিএন গ্রাহক সেবা বিনামূল্যে কিংবা কম খরচে ব্যবহার করা গেলেও প্রিমিয়াম শ্রেণির ভিপিএন সেবাগুলোয় বিভিন্ন উন্নত ফিচার এবং উচ্চ গতির সার্ভার ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায়। তবে, এইক্ষেত্রে পয়সা গুণতে হয় অনেক। বাজেট নিয়ে শঙ্কিত ব্যবহারকারীদের কাছে পয়সা খরচ করে গ্রাহক সেবা কিনে সুবিধা নেওয়ার বিষয়টি বিলাসিতাও মনে হতে পারে, বিশেষ করে তাদের যদি প্রাইভেসি কিংবা ভৌগলিক অবস্থানের ভিত্তিতে কনটেন্ট আনব্লক করার তেমন একটা প্রয়োজনীয়তা না থাকে।

সেবাদাতার ওপর নির্ভরতা

নানা ভিপিএন সেবায় সত্যিকারের প্রাইভেসি এবং নিরাপত্তা সুবিধার কথা উল্লেখ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এগুলো অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। বর্তমানে হাজার হাজার ভিপিএন সফটওয়্যার এবং অ্যাপ পাওয়া যায়। ব্যবহারকারীর ডেটা যেহেতু ভিপিএন সেবাদাতার হাত দিয়েই যায়, তাই সেবাদাতার সততার ওপরে নির্ভর করে ব্যবহারকারীর সকর তথ্য নিরাপত্তা।

জটিলতা এবং কারিগরি চ্যালেঞ্জ

ভিপিএন সেটআপ কিংবা কনফিগার করা অনভিজ্ঞ ব্যবহারকারীর কাছে ভীতিকরও হতে পারে, বিশেষ করে এনক্রিপশন প্রোটোকল, সার্ভার বাছাই এবং ‘টানেলিং’ পৃথক করার মতো বিভিন্ন উন্নত ফিচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে। এ ছাড়াও, ইন্টারনেট সংযোগে ‘ট্রাবলসশুটিং’, ‘ডিএনএস’ কিংবা ‘ডোমেইন নেইম সিস্টেম’ ফাঁস কিংবা নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ্লিকেশন বা ডিভাইস সেটআপের ক্ষেত্রে কারিগরি বিশেষজ্ঞের প্রয়োজনীয়তা, এমন বিষয়গুলো চ্যালেঞ্জিংও হতে পারে তুলনামূলক কম প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিকট।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on জুলাই ২৭, ২০২৪ 10:09 পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

খাওয়া কমালেই কী ইউরিক অ্যাসিড কমে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ খাওয়া কমালেই যে ইউরিক অ্যাসিড কমে যাবে তা কিন্তু নয়।…

% দিন আগে

যেসব অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ থেকে আমাদের সাবধান হতে হবে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যথাযথ সোর্স যাচাই না করে ফোনে হুটহাট অ্যাপ ডাউনলোড করে…

% দিন আগে

পাঁচ নায়িকা এবং বলিউডের অন্যতম কমেডি সিনেমা ‘হাউসফুল’

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বলিউডের অন্যতম কমেডি সিনেমার তালিকায় প্রথম দিকেই উঠে আসে ‘হাউসফুল’-এর…

% দিন আগে

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারও হত্যার চেষ্টা হয়েছে?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের গলফ খেলার সময় হওয়া গোলাগুলির…

% দিন আগে

পানিতে নেমে শিকার! জাগুয়ারের শক্তির সামনে পাত্তাই পেলো না শক্তিশালী কুমির!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, পানিতে জাগুয়ারের আক্রমণ থেকে নিজেকে বাঁচানোর…

% দিন আগে

সুন্দর একটি প্রাকৃতিক দৃশ্য

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। সোমবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে