দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা অনেক রকম মধু দেখেছি। তবে এবার এমন এক পাগলা মধুর কথা শোনা গেলো যে মধু খেলে হয় হ্যালুসিনেশন!
সংবাদ মাধ্যমের এক সংবাদে জানা যায়, নেপালের বিস্তীর্ণ পর্বতমালায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে একটি বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর লোকজন। বহু শতাব্দী ধরে হিমালয়ের ঢাল থেকে বিশেষ এক ধরনের মধু সংগ্রহ করেন এরা। মাউন্ট এভারেস্টের ধৌলাগিরি ডিস্ট্রিক্টের পর্বত শ্রেণির প্রত্যন্ত গ্রামে এদের বসবাস। বাড়ি-ঘরগুলো কাঠ কিংবা পাথর দিয়ে তৈরি। লোকালয় থেকে দূরের এই আদিম এলাকায় শুধু যাওয়া যায় একমাত্র পায়ে হেঁটে। পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো থেকে সেখানে যেতে সময় লেগে যায় বেশ কয়েকদিন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক খবরে জানা যায়, মূলত মধু সংগ্রহ এখানকার অনেক মানুষেরই প্রাচীন পেশা বা ঐতিহ্য, যা বংশপরম্পরায় চলে আসছে। প্রকৃতি এবং মৌসুমের সঙ্গে সংস্কৃতির মেলবন্ধনের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বলা যায়। কিছু প্রাথমিক সরঞ্জাম এবং কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই মধু সংগ্রহ করে থাকেন এখানকার লোকজন।
হিমালয়ের এই অঞ্চলটিতে অস্ত্র রাখা এবং পরিবহন করা সম্পুর্ণ বেআইনি। তবে বন্যপ্রাণীর কারণে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া কয়েক দিন ধরে বনে হাঁটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। সে কারণে এখানকার সংস্কৃতিকে বিপজ্জনক ও পাগলাটেও বলা হয়। বাস্তুসংস্থান বদলে যাওয়ায় এই মধু সংগ্রহ বর্তমানে কমতে শুরু করেছে। তবে এই মধুর ক্রমবর্ধমান খ্যাতি এবং চাহিদার কারণে এটি থাকে সবার আগ্রহের এক কেন্দ্রবিন্দুতে। বিশেষ করে চীনা, জাপানি এবং কোরিয়ান বাজারে এই মধুর চাহিদাও অনেক বেশি। চাহিদা বেশি ও মধু সংগ্রহের প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় এর দামও তুলনামূলকভাবে অনেকটা বেশি।
জানা যায়, হিমালয়ের দুর্গম পাহাড়ি উপত্যকায় বাস করে পৃথিবীর সবথেকে বড় মৌমাছির দল। একেক ঋতুতে একেক রকম মধু সংগ্রহ করে এইসব মৌমাছি। অনেকটা লালচে দেখতে এই মধু পরিচিত ‘পাগলা মধু’ নামে।
কেবলমাত্র বসন্তকালে রডোডেন্ড্রন নামে এক গাছের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে এইসব মৌমাছি। এই মধুতে গ্রায়ানোটক্সিন নামক একধরনের যৌগ থাকে। গ্রায়ানোটক্সিন থাকা মধু খেলে হ্যালুসিনেশনও হতে পারে। এই মধু মাত্র ২ চা-চামচ খেলেই হতে পারে গাঁজা সেবনের মতো অনুভূতিও!
নেপালীদের কাছে এই মধু নিরামক হিসেবেও পরিচিত, অ্যান্টিসেপটিক, কাশির সিরাপ এবং ব্যথা উপশমকারী হিসেবেও এই মধুকে ব্যবহার করেন নেপালীরা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org