দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকার পর সচল করা হয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। গতকাল রবিবার (২৮ জুলাই) বিকেল পৌনে ৩টার দিক থেকে এই সেবা চালু হলেও ৩টার পর হতে গ্রাহকরা মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারছেন। তবে গ্রাহকদের অভিযোগ, ইন্টারনেটে অত্যন্ত ধীরগতি পাওয়া যাচ্ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে গত ১৬ জুলাই থেকে মোবাইল ইন্টারনেটে ধীরগতি করা হয়। তারপর ১৮ জুলাই রাতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে কোটি গ্রাহকের কেনা ডাটার মেয়াদ ব্যবহার না করে শেষ হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে মোবাইল ইন্টারনেট সচল হলে অব্যবহৃত এই ডাটা ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে অপারেটরগুলো। গ্রাহকদের বিনামূল্যে ৫ জিবি ডাটা বোনাস দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মোবাইল অপারেটররা। তবে মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও এখনও গ্রাহকরা তাদের বোনাস ৫ জিবি ইন্টারনেট পাননি। কারা, কখন এই বোনাস ইন্টারনেট বিনামূল্যে পাবেন, তা জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন গ্রাহকরা।
অপারেটরগুলো জানিয়েছে যে, কারা এই বোনাস ডাটা পাওয়ার ক্ষেত্রে এলিজেবল (যোগ্য) বিবেচিত হবেন, ইন্টারনেট পুরোপুরি চালুর পর তা যাচাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এরপর এলিজেবল কিংবা যোগ্য গ্রাহকদের এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে। আর তখন সঙ্গে সঙ্গে তাদের ডাটা প্যাকেজটি চালুও হয়ে যাবে। যখন প্যাকেজটি চালু হবে, তখন থেকে ৭২ ঘণ্টা অর্থাৎ ৩ দিন ডাটা প্যাকেজের মেয়াদ থাকবে।
যারা ৫ জিবি ডাটা ফেরত পাবেন
অপারেটর কোম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, গত ১৮ জুলাই রাতে সারাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন করা হয়েছিলো। ওই সময়ের আগে যেসব গ্রাহক ডাটা প্যাকেজ কিনেছিলেন এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধের ১০ দিন সময়ের মধ্যে মেয়াদকাল শেষ হয়েছে, তারাই কেবলমাত্র বোনাস পাবেন ৫ জিবি ইন্টারনেট। এছাড়াও কমপক্ষে ১ হতে দেড় জিবি ইন্টারনেট অবশিষ্ট ছিল এমন গ্রাহকদের এই বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে বাছাই করাও হতে পারে।
কখন বোনাস পাবেন
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ অহমেদ পলক জানিয়েছেন যে, মোবাইল ইন্টারনেট সক্রিয় হওয়ার পর ইন্টারনেট সেবা চালু হলে গ্রাহকদেরকে ৫ জিবি বিনামূল্যে ডাটা দেওয়া হবে। তবে অপারেটররা বলছে যে, ঠিক কখন থেকে ডাটা দেওয়া শুরু হবে, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। যখন যাকে এই ডাটা প্যাকেজ বোনাস আকারে দেওয়া হবে, তখন ওই গ্রাহককে এসএমএস পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এদিকে জানা গেছে, অনেকেই এসএমএস পেয়েছেন এবং তাদের ৫ জিবি ডাটাও পেয়েছেন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org