দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে ভাষণ দিয়েছেন তাতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের প্রসঙ্গও। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে রাজধানী নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লা ময়দানে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
ওই ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ১৪০ কোটি ভারতীয় আজ বাংলাদেশের হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু অমুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন। ভারত সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়নের শুভাকাঙ্ক্ষী। আমরা আশা করছি বাংলাদেশে শীঘ্রই স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে। ভারত চায় বাংলাদেশের সব হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু অমুসলিম নাগরিকদের নিরাপত্তা যেনো নিশ্চিত হয়।
শিক্ষার্থী জনতার টানা এক মাসের আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে শেষ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর ইতিমধ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে; বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহম্মদ ইউনূস এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। কয়েক দিন পূর্বে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার শাহবাগে দেশজুড়ে হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদ এবং নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ করেন বাংলাদেশের হিন্দুরা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবরে আরও বলা হয়, সরকার গঠন করার পর দেশের হিন্দু এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের আশ্বস্ত করতে গত মঙ্গলবার ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজধানী ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যান ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাদের ‘ন্যায়বিচার’ এবং ‘সম–অধিকার’ সুনিশ্চিত করার কথাও বলেছেন।
ওইদিন ড. ইউনূস বলেছিলেন, ‘সবার সমান অধিকার। আমরা সবাই এক আর আমাদের অধিকারও এক। আমাদের ভেতর কোনো রকম বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। আমাদের সহায়তা করুন। ধৈর্য ধরুন ও পরে বিচার করুন—আমরা কী করতে পেরেছি- আর কী পারিনি। আমরা যদি ব্যর্থ হই, তখন আমাদের সমালোচনা করবেন। প্রশাসন পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছিলেন, হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আপনারা আতঙ্কিত হতে হবে না।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org