দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দৈনন্দিন জীবনে আলুর গুরুত্ব অপরিসীম। তবে ক্যালোরি কমানোর জন্য আলু খাওয়া ছাড়েন অনেকেই। পুষ্টিবিদরা বলেছেন শুধু আলু নয়, যে কোনও ধরনের স্টার্চজাতীয় খাবার বেশি খেলেই মোটা হবেন তা নয়।
দেহের বাড়তি মেদই বলুন কিংবা রক্তে বাড়তি শর্করাই বলুন— সবকিছুর নেপথ্যে রয়েছে উচ্চ ক্যালোরি, কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার। এরসঙ্গে সেই খাবারে স্টার্চ কিংবা গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক বেশি থাকলে তো আর কথাই নেই। উপরের এই সব ক’টি উপাদানই রয়েছে এই আলুর মধ্যে। তবে দৈনন্দিন জীবনে আলুর গুরুত্বও কিন্তু কম নয়। পুষ্টিবিদরা বলেছেন শুধু আলুই নয়, যে কোনও ধরনের স্টার্চজাতীয় খাবার বেশি খেলেই মোটা হয়ে যাবেন। তবে রান্নার পদ্ধতি জানলে আলুর এই দোষ মাফ করে দেওয়া যাবে।
কী ধরনের স্টার্চ রয়েছে আলুতে?
স্টার্চ হলো চার প্রকার। ‘আরএস১’, ‘আরএস২’, ‘আরএস৩’ ও ‘আরএস৪’। যারমধ্যে আলুতে যে ধরনের স্টার্চ থাকে তা হলো ‘আরএস২’ ধরনের। আবার আলু সেদ্ধ করলে একেবারে ঠান্ডা হয়ে গেলেই সেই স্টার্চের প্রকার তখন বদলে যায়। সেটি তখন হয়ে যায় ‘আরএস৩’ প্রকার। এই ‘আরএস৩’ হলো আসলে ‘রেট্রোগেটেড স্টার্চ’। অর্থাৎ, স্টার্চ থাকবে তবে তার যে খারাপ গুণ রয়েছে সেটি নষ্ট হয়ে যাবে।
এই বিষয়ে পুষ্টিবিদরা বলেছেন, এই ধরনের স্টার্চ শরীরের জন্য খুব একটা ক্ষতি করে না। আবার রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়ার ভয়ও থাকে না। সেদ্ধ করা আলু ফ্রিজে রেখেও খেতে পারেন ডায়াবেটিকরা। সেদ্ধ আলু খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি একেবারেই নেই বললেই চলে। আলুতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণও বেশি। তবে নিয়ম মানলে গ্লাইসেমিক ইনডেস্কের মান কমিয়েও ফেলা সম্ভব। এ ছাড়াও, আলু কেকের মতো বেক করে বা ভাপিয়ে নিয়েও খাওয়া যেতে পারে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org