দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৌকে কাঁধে নিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতা নতুন নয়। বহু পুরোনো একটি প্রতিযোগিতা। তবে এটিও ঠিক যে এক বিচিত্র প্রতিযোগিতা এটি। এই প্রতিযোগিতায় রয়েছে বিচিত্র পুরস্কারও!
আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে যে নিয়ম রয়েছে তাতে এক কথায় বলা যায়, বিয়ের পরই নিতে হয় বৌয়ের দায় ভার। তাই বলে বৌকে কাঁধে নিয়ে দৌড় দেওয়া! হিন্দি সিনেমা ‘দম লাগা কে হাইসা’র কথা আমাদের অনেকের জানা। যেখানে পর্দার নায়ক তার স্থূলাঙ্গী স্ত্রীকে পিঠে তুলে নিয়ে দৌড়ে পুরস্কার জিতে নেন। তবে এইসব শুধু রুপালি পর্দার ঘটনা নয়। বাস্তবেও আয়োজিত হয়ে থাকে বৌকে কাঁধে নিয়ে দৌড়। তবে যে সে প্রতিযোগিতা নয়, রীতিমতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে বাস্তবে অর্ধাঙ্গিনীর ভার বইতে হয় স্বামীকেও।
এক হাজার বছরের পুরানো খেলা হলো এই স্ত্রীকে কাঁধে নিয়ে স্বামীর দৌঁড়ানোর প্রতিযোগিতা। তবে সেটি সোজা রাস্তায় নয়। পানি-কাদা, খানা-খন্দে ভরা রাস্তার মধ্যদিয়ে স্ত্রীকে টেনে নিয়ে যাওয়ার এই আজব দৌড়ে শামিল হন বেশ কয়েক জোড়া দম্পতি।
এই প্রতিযোগিতার মাঝখানে থাকে অনেক বাধাবিপত্তি। কৃত্রিমভাবে হাজার রকম বাধাদানের ব্যবস্থা থাকে এই প্রতিযোগিতায়। দৌড় ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৬০ মিটার। যারমধ্যে ১ মিটার গভীর খাদ থাকে। এমনকি কাদা-পানির মধ্যে স্ত্রীকে কাঁধে তুলে নিয়ে ছুটতে হয়। এই রকমভাবে যিনি সবার আগে শেষ করতে পারবেন, তিনিই জিতবেন এই অভিনব বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপটি।
কবে থেকে এই খেলাটি শুরু হয়েছিল, তা নিয়ে কিছুটা মতভেদ রয়েছে। ভারত ছাড়াও ফিনল্যান্ড, হাঙ্গেরি, এস্টোনিয়ায় বেশ জনপ্রিয় এই প্রতিযোগিতাটি। ১৮০০ শতকের শেষের দিকে হেরক্কো রসভো, মতভেদে হ্যারকো রোসো নামে এক কুখ্যাত ডাকাতের হাত ধরেই নাকি প্রচলন ঘটে এই খেলাটির। এই রোসোর গল্প থেকে স্ত্রীকে কাঁধে করে স্বামীর দৌড় প্রতিযোগিতার ৩টি তথ্য পাওয়া পায়। তবে যেদিন বা যেভাবে শুরু হোক না কেনো, এই প্রতিযোগিতাটি যে সবার মনোযোগ আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে তা নির্দিধায় বলা যায়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org