দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বালুময় ধু ধু মরুভূমির বুক চিরে এগিয়ে চলেছে যেনো এক বিশালাকার সাপের মতো ট্রেন! যার আদি-অন্ত খুঁজতে হলে অপেক্ষা করতে হতে পারে ২০ মিনিট হতে এক ঘণ্টাও। এই ট্রেনটি দৈর্ঘ্য প্রায় আড়াই কিলোমিটার, এতে বগি রয়েছে প্রায় ২০০টি!
পৃথিবীর দীর্ঘতম ট্রেন হলো এই মরিশানিয়া এক্সপ্রেস। এই ট্রেন চলে বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম স্থান সাহারা মরুভূমির মধ্যেদিয়ে। এই ট্রেনটিতে চড়লে এক টিকিটেই ঘুরে বেড়ানো যাবে গোটা সাহারা এলাকা।
তবে পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা এবং ভারি এই ট্রেনটি মূলত যাত্রিবাহী ট্রেন নয়। প্রায় ১৬ হাজার টন আকরিক লোহা পরিবহণ করে এই মরিশানিয়ান এক্সপ্রেস ট্রেনটি। বিশাল সাহারা মরুভূমির একটা বড় অংশই পড়েছে এই মরিশানিয়া দেশটিতে। দেশটির আয়তন প্রায় ১০,৩০,০০০ বর্গকিমি। বিশাল এক দেশ, এর বিশাল আয়তন, তবে জনসংখ্যা কিন্তু খুবই কম।
সাহারার মতো প্রতিকূল পরিবেশে প্রায় জনমানবহীন অঞ্চল পেরিয়ে আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এই মরিশানিয়ান এক্সপ্রেস পরিবহণ করে চলেছে দেশটির অমূল্য সম্পদ।
আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যেই পড়েছে এই মরুভূমি। এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আধুনিক মাধ্যমগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো এই ট্রেন। তাই আকরিক লোহা কিংবা অন্যান্য পণ্য বহন করার পাশাপাশি এই ট্রেনটিতে উঠেন সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা।
১৯৬৩ সালে মরিশানিয়ার দ্বিতীয় বন্দর শহর নুয়াধিবৌর লৌহ খনি হতে লোহা নিয়ে সাহারা পাড়ি দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এই ট্রেনটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো। ২০০ বগির মরিশানিয়ান এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালাতে প্রয়োজন পড়ে ৩-৪টি শক্তিশালী লোকোমোটিভ। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ২০০৯ সালের দিকে ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে তা পুনরায় চালুও করা হয়।
মরিশানিয়ার জুনাব থেকে নুয়াধিবৌর বন্দর শহরে পৌঁছাতে এই ট্রেনটিকে ৭০৬ কিমি পথ পাড়ি দিতে হয়। দীর্ঘ যাত্রাপথ পাড়ি দিতে সময় লাগে ২০ ঘণ্টা। এক একটি বগিতে অন্তত ৮৪ টন লোহা পরিবহণ করা হয়ে থাকে।
তবে শুধু দীর্ঘ মালবাহী ট্রেনের তকমা জুটলেও এই ট্রেনটিতে চড়লে দেখা যায় নানা অদ্ভুত দৃশ্য। ট্রেনটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহণ মাধ্যমও বটে।
সাহারার স্থানীয়রা চলন্ত মরিশানিয়ান এক্সপ্রেসে ওঠেন এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাওয়ার জন্য। সে জন্য অবশ্য যাত্রীদের কোন টিকিট কিংবা কোনো অর্থ দিতে হয় না। তবে সাহারার তীব্র গরমের মধ্যে যাত্রী পরিবহণের পক্ষে মোটেও উপযোগী নয় এই ট্রেনটি।
ট্রেনে পাওয়া যায় হরেকরকম খাবারসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। ট্রেনে তুলে দেওয়া হয় ভেড়ার পাল। শুনতে অবাক লাগলেও মালবাহী ট্রেনের মধ্যে দীর্ঘ যাত্রাপথে চলে প্রার্থনা!
ট্রেনটি ছাড়ার অন্তত ১২ ঘণ্টা পর সাহারায় চৌমে শহরে থামে। সেখানে এক ঘণ্টা সময় পাওয়া যায় যাত্রী ও পণ্য নামাতে। তাছাড়াও ঐতিহাসিক শহর আতারার মধ্যেদিয়ে যাত্রা করে মরিশানিয়ান এক্সপ্রেস ট্রেনটি।
তাছাড়াও পুরো পথেই রয়েছে বেশ কয়েকটি পুলিশি তল্লাশিচৌকিও। তবে এই চৌকিগুলোতে ট্রেন পুরোপুরি না থামিয়ে মন্থর গতি করে দেওয়া হয়। এই ধীর গতির মধ্যেই পুলিশ ট্রেনে ওঠে ও তল্লাশি চালিয়ে আবারও নেমে পড়ে।
২০১৯ সাল হতে মরিশানিয়ান রেলওয়ে ভ্রমণকারীদের এই ট্রেনে ভ্রমণের সুযোগ করে দেয়। ভ্রমণার্থীদের জন্য দু’টি কামরা সংযুক্ত করা হয় এবং তারা একটি লোহার খনিও ঘুরে দেখার সুযোগ পাবেন। এই পরিষেবাটি পেতে হলে অবশ্য টিকিট কাটতে হয় যাত্রীদের।
মরিশানিয়া মূলত অঢেল প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ। সেই সম্পদ পরিবহণের জন্য তারা বানিয়েছে পৃথিবীর অন্যতম এই বিখ্যাত রেললাইন। ভাবতে গেলে সত্যিই যা এক বিস্ময়ও বটে।
তথ্যসূত্র: https://www.offbeattravelling.com
>>>>>>>>>>>>>>
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
This post was last modified on আগস্ট ২৫, ২০২৪ 12:22 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ কাঁচা মরিচ আমাদের রান্নাঘরের এক অপরিহার্য উপাদান। খাবারের স্বাদ, গন্ধ…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ১৪ নভেম্বর মুক্তি পায় কলকাতার ‘দ্য একাডেমি অব ফাইন আর্টস’…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার কঠোর নিন্দা জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় “তোমক” নামে এক জনপ্রিয় বিড়ালকে শহরের ‘সম্মানিত…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৫ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শসা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় অন্যতম পরিচিত এবং সহজলভ্য একটি সবজি।…