দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ২০২৪ সালে কমনওয়েলথ বৃত্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশিদের জন্য একটি প্রি- ডিপারচার ব্রিফিং সেশনের আয়োজন করেছে ব্রিটিশ কাউন্সিল। সোমবার (২৬ আগস্ট) ব্রিটিশ হাই কমিশনারের বাসভবনে এই ব্রিফিং সেশন আয়োজিত হয়।
১৯৬০ সাল থেকে শুরু হওয়া কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামে এখন পর্যন্ত মোট ১,৮৬৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশনের (সিএসসি) মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের অর্থায়নে কমনওয়েলথ বৃত্তি বা ফেলোশিপ লাভ করেছেন। বর্তমানে, ১০৫ জন বাংলাদেশি কমনওয়েলথ বৃত্তির অধীনে অধ্যয়নরত আছেন। এর মধ্যে ২০২৩ সালের ব্যাচের শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন যাদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ প্রায় শেষের দিকে।
ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড, ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ, এসওএএস ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন, ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক, ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা সহ যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে এ বছর বাংলাদেশ থেকে বৃত্তি পেয়েছেন ২৬ জন। কমনওয়েলথ বৃত্তির প্রতিটি স্কিম অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক। এতে সফলতা অর্জনে প্রার্থীদের অসাধারণ অ্যাকাডেমিক রেকর্ড থাকতে হয়।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, “এই বছর ২৬ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের জন্য কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রাপ্ত হয়েছেন যারা বাংলাদেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। এজন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। [মডার্ন] কমনওয়েলথ ও বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাজ্যের চলমান অঙ্গীকারের প্রতিফলন এ বৃত্তি। বৃত্তিপ্রাপ্ত সকল স্কলারদের অভিনন্দন। আমি তাদের নিরন্তর সাফল্য কামনা করি।”
যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার ক্ষেত্রে জরুরি তথ্য ও নির্দেশনা প্রদান করার পাশাপাশি বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের অসামান্য এ সাফল্য উদযাপন করতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামের ইতিবাচক প্রভাবগুলোও তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন পরিচালক শ্যানন ওয়েস্ট বলেন, “যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষার সুযোগ তৈরি করা কমনওয়েলথ বৃত্তি প্রোগ্রামে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক স্বীকৃতি সত্যিই প্রশংসনীয়। এসকল বৃত্তিপ্রাপ্তরা যুক্তরাজ্যের উচ্চশিক্ষার আন্তর্জাতিক ধারায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন এবং ফিরে এসে, তারা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এখন পর্যন্ত প্রায় ১,৮৬৭ জন স্কলার এই সম্মানজনক প্রোগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের জীবন ও দেশ গড়ার সুযোগ পেরেছেন। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বের প্রমাণ এটি। সকল বৃত্তিপ্রাপ্তদের প্রতি আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি বিশ্বমঞ্চে তারা তাদের ইতিবাচক প্রভাব রাখতে সক্ষম হবে।”
এ বছরের স্কলাররা বিভিন্ন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবেন, যার মধ্যে রয়েছে বিহেভিয়োরাল অ্যান্ড ইকোনমিক সায়েন্স, বায়োলজিকাল কেমিস্ট্রি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটেশনাল অ্যাপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স, ডেটা অ্যান্ড ডিসিশন অ্যানালিটিক্স, এডুকেশন, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স, জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেমস, গ্লোবাল হেলথ পলিসি, গ্লোবাল হেলথ সায়েন্স অ্যান্ড এপিডেমিওলজি, হেলথকেয়ার ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রাইটস, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ল এবং হিউম্যান রাইটস, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স ল, ম্যানেজমেন্ট, মেডিকেল স্ট্যাটিস্টিকস অ্যান্ড হেলথ ডাটা সায়েন্স, মিউজিয়াম স্টাডিজ, পাবলিক হেলথ, পাবলিক পলিসি, সাসটেইনেবল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি ও টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল।
অনুষ্ঠানে বৃত্তিপ্রাপ্তরা একে অপরের সাথে যোগাযোগের ও নেটওয়ার্ক গড়ার সুযোগ পান, যা যুক্তরাজ্যে তাদের অ্যাকাডেমিক ও ব্যক্তিগত সাফল্যে অবদান রাখবে।
৬৫ বছর ধরে অসাধারণ অ্যাকাডেমিক রেকর্ড ও নেতৃত্বের গুণ সম্পন্ন প্রার্থীদের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ প্রদান করে আসছে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি)। দেশ ও সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা স্কলারদের অর্জনগুলোকে প্রতিফলিত করে আগামী বছরগুলোতেও কমনওয়েলথ দেশগুলোতে তাদের পরিবর্তনকারী প্রভাব অব্যাহত রাখতে আশাবাদী সিএসসি। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org