দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রথম ডেপুটি স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেছেন যে, ইসরায়েল গাজায় তার সামরিক অভিযান এখনও অব্যাহত রেখেছে। যদিও তারা জিম্মি মুক্তির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে হামাসের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন। তবে এটিতাদের একটি কৌশল মাত্র।
দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বৈঠকে বলেন যে, প্রতিদিন ইসরায়েল পরিচালিক গাজা অভিযানের মাধ্যমে জিম্মিদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও কমে যাচ্ছে। অথচ নিরাপত্তা পরিষদ এই বিষয়ে সকলেই একমত যে, বাকি জিম্মিদের কোনো সামরিক অভিযানের মাধ্যমে মুক্ত করা সম্ভব নয়। এইক্ষেত্রে হামাসের সঙ্গে আলোচনার কোন বিকল্পও নেই।
ইসরায়েলি সমাজও এটি ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছে। তবে দুঃখজনকভাবে, ইসরায়েলি নেতৃত্ব এখনও আলোচনাকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি ঘোরানোর কৌশল হিসেবেই ব্যবহার করছে।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এই নীতি পরিবর্তনের কোনো লক্ষণই নেই। নিরাপত্তা পরিষদের প্রায় সব সদস্য জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী কাজ করতে ও দেশগুলোকে জাতিসংঘের প্রস্তাব বাস্তবায়নে এগিয়ে আসার জন্য চাপ প্রয়োগেও একমত। দুঃখজনকভাবে হলেও সত্যি যে, আমরা এই ঐক্য অর্জন করতে পারছি না, কারণ হলো আমাদের আমেরিকান সহকর্মীরা ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে সমর্থনও দিয়ে চলেছে। তারা ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ করছে ও গাজায় বলপ্রয়োগের প্রক্রিয়াকেও উৎসাহিত করছে।
গত ১৫ এবং ১৬ আগস্ট দোহাতে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির বিষয়ে আরেক দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। মিশর, কাতার এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতারা আলোচনা শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছেন, এই আলোচনাটি ইতিবাচক পরিবেশেই হয়েছে। তারপর ২৫ আগস্ট কায়রোতে পরবর্তী দফা আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের পরিচালক ডেভিড বার্নিয়া ও শিন বেতের প্রধান রনেন বার’ও উপস্থিত ছিলেন। তবে হামাস আলোচনায় অংশ না নিলেও পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে কায়রো সফরে সম্মত হয়।
এদিকে মার্কিন প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ১৮ প্যারার একটি যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা ৯০ শতাংশই ইতিমধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org