জ্বালানিখাতে সুশাসন ফেরাতে আইবিএফবি’র এনার্জি অডিটের আহ্বান

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের অর্থনীতিতে গত এক দশকে যে দূর্নীতি ও অনিয়ম হয়েছে সেখান থেকে উত্তরনে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতের সকল প্রকল্প এবং চুক্তির অডিট করার পরামর্শ এসেছে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) আজ অনুষ্ঠিতব্য এক সেমিনার থেকে।

বুধবার ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় আইবএফবির অফিসে “”চ্যালেঞ্জস ইন রিফোর্ম ইন এনার্জি এন্ড পাওয়ার সেক্টর” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি পন্যের মূল্য নির্ধারণে গণ-শুনানী পুন:রায় চালু করার প্রয়াসকে স্বাগত জানান বিশেষজ্ঞ বক্তারা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জ্বালানি উপদেষ্টা ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. ম তামিম। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক প্রফেসর ড. ইজাজ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইবিএফবি সভাপতি ও এনার্জি প্যাকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন রশীদ। তিনি বলেন, “আইবিএফবি সব সময় দেশের ব্যবসায় এবং উদ্যোক্তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এডভোকেসি করছে”।

Related Post

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ম তামিম বলেন, “ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিয়ে একটা ভূল ধারনা আছে, এক লক্ষ কোটি টাকার পেমেন্ট সেখানে কতটুক ব্যবহার হচ্ছে সেটা অনুসন্ধান করা দরকার”।

তিনি বলেন, “আমাদের দেশে টার্গেট করে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়েছে। ব্যবহার করছি ১৩ হাজার মেগাওয়াট। জ্বালানি বিদ্যুৎসহ সকল টেকনিক্যাল বিষয়গুলো পলিটিকাল ইস্যু বানানো হয়েছে। জিডিপি থেকে শুরু করে প্রতিটি ক্ষেত্রে তথ্য সন্ত্রাস হয়েছে। পলিটিক্যাল কারণে ২০ বছর ধরে ৯ শতাংশ গ্রোথ দেখানো হয়েছে”।

ব্যক্তিগত মুনফার কারণে দেশের জ্বালানিখাতের বিকাশে স্থানীয়ভাবে গ্যাস অনুসন্ধান করা হয়নি বলে উল্লেখ করেন ম তামিম। জ্বালানি মন্ত্রনালয় দরকার আছে কিনা প্রশ্ন তুলে বুয়েটের অধ্যাপক ইজাজ আহমেদ বলেন, আমেরিকা জ্বালানি মুল্য নির্ধারণে সরকারের কোন ভূমিকা নেই।

তিনি বলেন, আমাদের জ্ব্বালানি মন্ত্রনালয় মন্সটার হয়ে গেছে। আমেরিকায় জ্বালানি মন্ত্রী আছে, কিন্তু সেখানে জ্বালানী সহ সকল নাগরিক সেবা প্রদানে আলাদা বডি আছে, বার্কের মত কমিশনগুলো মুলপ্রবন্ধে ড ইজাজ বলেন, জ্বালানির জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের যে সংকট, তার কারনেই জ্বালানি কনজাম্পশন বাড়েনি। আমাদের প্রাকৃতিক গ্যাসের ৬০ শতাংশ ব্যবহার হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যার মধ্যে ১৮ শতাংশ যাচ্ছে ক্যাপটিভ পাওয়ার। আবাসিকে ব্যবহার হচ্ছে ১১ শতাংশ। দেশের ২৯টি গ্যাস ফিল্ডের মধ্যে ২০ টি অপারেশনে আছে বলে মুল প্রবন্ধে উল্লেখ করা হয়।

প্রফেসর ইজাজ বলেন, এনার্জি সেক্টরে সবকিছু আমদানি নির্ভর হয়ে গেছে। আমাদের বর্তমান গ্যাস উৎপাদন ২২০২ এমএমসিএফডি। গত ৫ বছরে আমরা সমপরিমাণ গ্যাসের ব্যবহার বাড়িয়েছি অনেক ক্ষেত্রে। ফলে সরবরাহে সংকট তৈরি হয়েছে।

আমাদের দেশের গ্যাস সঞ্চালন লাইনে ত্রুটির কারনে যে পরিমাণ সিস্টেম লস (৫ শতাংশ) তার ক্ষতি বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ১৫ ডলার রেটে যে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে তা ভবিষ্যতে বাড়লে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমান বাড়বে। নয় বছর পরে দেশের ন্যাচারাল গ্যাসের রিজার্ভ শুন্যের কোঠায় নামবে বলে উল্লেখ করেন প্রফেসর ইজাজ।

বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএর) সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, জ্বালানি মন্ত্রনালয় দেশের সরকার প্রধানের দপ্তরে থাকা সত্ত্বেও আমরা দেখেছি গত একদশকে কিভাবে প্রতিযোগিতা ছাড়াই এনার্জি চুক্তি করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের কোম্পানি রাতারাতি সিংগাপুরের কোম্পানি হয়ে গেলো, দেশের রিজার্ভ যখন সংকটে আমরা ডলার পৌছে দিয়ে এসেছি সিংগাপুরে গিয়ে। সাধারন মানুষকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে।

বিটিএমএর পরিচালক রাজীব হায়দার বলেন, গত কয়েক বছরে শিল্পে গ্যাসের দাম বেড়েছে দুইশো শতাংশের বেশি। বর্তমানে ৩১.৫ টাকা রেটে গ্যাস কিনতে হচ্ছে আমাদের। কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে। আমাদের সাথে বিদেশী ক্রেতাদের চুক্তি হয় কয়েক বছরের জন্য। আমাদের বিজনেসে ওভারহেড খরচ।

তিনি বলেন, দেশের শিল্পাঞ্চলের অধিকাংশ পল্লী বিদ্যুতের অধীন। পল্লী বিদ্যুতে লোড শেডিং কমানো যাচ্ছে না। আসলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল লাইনে সেবা দেয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড।

এনার্জি এন্ড পাওয়ার সম্পাদক মোল্লা আমজাদের সঞ্চালন সভায় বাংলাদেশ সোলার অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ সভাপতি) নুরুল আখতার, আইবিএফবির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, ভাইস প্রেসিডেন্ট এমএস সিদ্দিকী। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।

>>>>>>>>>>>>>>

ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে

মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।

লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর

২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।

সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-

১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।

২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।

৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।

৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।

৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।

৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।

৭. ত্বকে র‌্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।

রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :

১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।

২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।

এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অপরদিকে

জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:

১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।

২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।

৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।

৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।

৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।

৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।

৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।

৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org

This post was last modified on সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪ 5:17 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

শরীর ভালো রাখতে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড দরকার

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমিষ ছুঁয়েও দেখেন না অনেকেই। তাহলে শরীরের প্রয়োজনীয় ওমেগা থ্রি…

% দিন আগে

বিনোদনের সেরা অভিজ্ঞতা পেতে চাই কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন আধুনিক টিভি

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সর্বপ্রথম স্বয়ংক্রিয় কোনো বস্তুর ধারণা করেছিলেন প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকরা। আর…

% দিন আগে

কর্টিসল হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হলেই কী বিগড়ে যাবে জীবনের ছন্দ?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানব শরীরে কর্টিসলের ক্ষরণ বাড়লে নানাবিধ শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা…

% দিন আগে

ফারুকীর প্রশ্ন: শেখ হাসিনাকে আমরা কিভাবে দানব হয়ে উঠতে সাহায্য করলাম?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু…

% দিন আগে

ডোনাল্ড লু’র ঢাকা সফর নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট যা জানালো

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বর্তমান…

% দিন আগে

গোসাপের পিছু ধাওয়া করে বিপত্তি: ঘরে ঢুকে পড়লো ১১ ফুট লম্বা গোখরো!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গোসাপের পিছু ধাওয়া করে ঘটে বিপত্তি। শেষমেষ ঘরে ঢুকে পড়লো…

% দিন আগে