দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তির জীবনের নেপথ্যে থাকে মায়ের বিশাল অবদান। মায়ের দিক নির্দেশনাই সন্তানকে পৌঁছে দেয় তার অভিষ্ট লক্ষ্যে। তারকাদের জীবনও রয়েছে। বলিউডের কয়েকজন তারকা মা রয়েছেন, যারা নিজেদের সন্তানদের গড়ে তুলেছেন নিজেরাই। মায়ের দেখানো পথ ধরেই হেঁটেছেন সাফল্যের পথে।
ভারতীয় চলচ্চিত্র দুনিয়ার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুচিত্রা সেন, জয়া বচ্চন, শর্মিলা ঠাকুর, হেমা মালিনী, ডিম্পল কাপাডিয়া, তনুজা, নীতু কাপুর, অমৃতা সিং, ববিতা, অপর্ণা সেন এবং শ্রীদেবী। এই বিখ্যাত মায়ের সন্তানরা হলেন অভিষেক বচ্চন, সোহা আলি খান-সাইফ আলি খান, মুনমুন সেন, এশা দেওল, টুইঙ্কেল খান্না, কাজল-তানিশা, কাজল, রণবীর কাপুর, কারিশমা-কারিনা, সারা আলি খান, কঙ্কনা সেন শর্মা এবং জানভি কাপুর।
মায়ের পথ ধরেই চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রেখেছেন অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী। কেওবা মায়ের পরিচয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন কেওবা আবার নিজেদের পরিচিতি গড়েছেন নিজের যোগ্যতাতে।
জয়া বচ্চন-অভিষেক বচ্চন
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া বচ্চনের একমাত্র সন্তান অভিষেক বচ্চন। মায়ের মতোই অভিনয় জগতে কাজ করলেও খুব একটা সফলতা পাননি বলিউডে। তবে প্রায় খবরের শিরোনামে উঠে আসে ‘ধুম’খ্যাত এই তারকার নাম।
শর্মিলা ঠাকুর-সোহা আলি খান
সৌন্দর্যের প্রতীমা হিসেবে খ্যাত শর্মিলা ঠাকুর। নবাব মনসুর আলী পতৌদির স্ত্রী এবং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশধর শর্মিলা ঠাকুর ছিলেন অসাধারণ একজন অভিনেত্রী। ১৯৬৯ সালে মনসুর আলীকে বিয়ে করলে তার ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। ১৯৭০ সালে সাইফ আলি খান , ১৯৭৬ সালে সাবা আলি খান এবং ১৯৭৮ সালে জন্ম হয় সোহা আলি খানের। মেয়ে সোহা আলি খান চলচ্চিত্রে তার অভিনয় দিয়ে তেমন একটা জাদু দেখাতে পারেননি। দেখতে মায়ের মতো হলেও মায়ের জনপ্রিয়তার ধারে কাছেও কিন্তু যেতে পারেননি সোহা, তবে জনপ্রিয়তা অবশ্য কম পাননি। তবে ছেলে সাইফ আলি খান এখনও বলিউড ইন্ডাস্ট্রির সেরা নায়কদের মধ্যে একজন হিসেবে রয়েছেন।
হেমা মালিনী-এশা দেওল-অহনা দেওল
সত্তর এবং আশি দশকের ‘ড্রিম গার্ল’ খ্যাত অভিনেত্রী হেমা মালিনী। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন বলিউডের সেরা নায়িকাদের একজন হিসেবে। এখনও নিজের সৌন্দর্য ও যোগ্যতায় তারকাখ্যাতি বহাল রেখেছেন তিনি। তেমনি পিছিয়ে নেই ব্যক্তিগত জীবনও। ১৯৮০ সালে সে সময়ের জনপ্রিয় বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রকে বিয়ে করেন তিনি। তারপর ১৯৮২ সালে এশা দেওল এবং ১৯৮৪ সালে অহনা দেওলের মা হন তিনি। বড় মেয়ে এশা দেওলকে তিনি নিয়ে আসেন চলচ্চিত্রে। মাকে অনুকরণ করে রূপালি জগতে এলেও দর্শকদের প্রত্যাশায় জায়গা করে নিতে পিছিয়ে গেছেন তিনি। ছোট মেয়ে অহনা দেওল ‘গুজারিশ’ ছবির মাধ্যমে সহ-পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন।
ডিম্পল কাপাডিয়া-টুইঙ্কেল খান্না
সত্তর এবং আশি দশকের সব বয়সী দর্শকের হৃদয় স্পর্শ করেছিলেন জনপ্রিয় নায়িকা ডিম্পল কাপাডিয়া। ‘ববি’ এবং ‘সাগর’ ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে শুধু ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ড নয়, সৌন্দর্য ও অভিনয়গুণে পেয়েছেন প্রশংসাও। এখন প্রায় ৬০ বছর চলছে। সুযোগ পেলেই অভিনয়ও করেন। ১৯৭৩ সালে বলিউড অভিনেতা রাজেশ খান্নাকে বিয়ে করেন ডিম্পল কাপাডিয়া। তারপর ১২ বছর বিরতি দিয়ে ১৯৮৪ সালে আবারও অভিনয়ে ফেরেন তিনি। এর মাঝের সময়টায় ১৯৭৪ সালে টুইঙ্কেল খান্না এবং ১৯৭৭ সালে রিঙ্কী খান্না নামে দুই সন্তান জন্ম দেন তিনি। দুই মেয়েকেই বলিউড ফিল্মে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন ছিলো। বড় মেয়ে টুইঙ্কেল খান্না মায়ের স্বপ্নের পথ ধরে কিছুদূর এগিয়ে এলেও অক্ষয় কুমারকে বিয়ে করে অভিনয় থেকে পুরোপুরি সরে যান তিনি। ছোট মেয়ে রিঙ্কী খান্না বলিউডে নাম লেখাতে না লেখাতেই হারিয়ে গেছেন।
তনুজা-কাজল-তানিশা
‘বাহারে ফির আয়েঙ্গে’ এবং ‘জুয়েল থিফ’ ছবির মিষ্টি মেয়েটির হাসির কথা বলিউড দর্শকরা এখনও ভুলতে পারেননি। এই মিষ্টি হাসির মেয়েটি হলেন সেই সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা তনুজা। এক সময় নিজের ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠিত থাকলেও বর্তমানে কাজলের মা হিসেবে দর্শক তাকে বেশি চেনেন। সমু মুখার্জিকে ১৯৭৩ সালে বিয়ে করেন তনুজা। তারপর ১৯৭৪ সালে কাজল এবং ১৯৭৮ সালে তানিশার জন্ম হয়। বড় মেয়ে কাজল সৌন্দর্য এবং যোগ্যতায় কোনো অংশে মায়ের চেয়ে কম নয়। স্বামী অজয় দেবগন এবং দুই সন্তানকে নিয়ে পুরোপুরি সংসারী হয়ে গেলেও মাঝে-মধ্যেই অভিনয়ে চমক দেখাচ্ছেন কাজল। অভিনয়ে মাধ্যমে মায়ের প্রকৃত সন্তান হিসেবে নিজেকে প্রমাণও করেছেন তিনি। অপরদিকে ছোট মেয়ে তানিশা অনেকটাই ব্যর্থ।
নীতু কাপুর-রণবীর সিং
ঠিক যেনো মায়ের পথেই হাঁটছেন বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা রণবীর কাপুর। ‘আনজানা আনজানি’, ‘তামাশা’, ‘জাগ্গা জাসুস’, ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’, ‘ইয়ে জাওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি’, ‘রকস্টার’-এর মতো ছবিগুলো ভক্তদের উপহার দিয়েছেন বলিউডের এই অভিনেতা।
অমৃতা সিং-সারা আলি খান
অভিনেত্রী অমৃতা সিং ‘মার্দ’, ‘বেতাব’, ‘আয়না’, ‘নাম’ এবং ‘টু স্টেট’র মতো ব্যবসায় সফল ছবিগুলোতে অভিনয় করেছেন। তবে এখন খুব একটা রূপালি পর্দায় দেখা যায় না তাকে। ১৯৯১ সালে বলিউড অভিনেতা সাইফ আলি খান’কে বিয়ে করেন অমৃতা। এরপর ১৯৯৩ সালে মেয়ে সারা আলি খান এবং ২০০১ সালে ছেলে ইব্রাহিম খানের জন্ম হয়। একই বছর বিচ্ছেদ ১০ বছরের সংসারের ইতি টানেন এই দম্পতি সাইফ-অমৃতা। অমৃতার মেয়ে সারা এখন মায়ের মতোই অভিনয় জগতে। ইতিমধ্যে ‘কেদানাথ’ নামে একটি ছবিতে কাজ করেন সারা।
শ্রীদেবী-জানভি কাপুর
এক সময়ের বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবী। ৩০০’র বেশি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। তবে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হঠাৎ করেই না ফেরার দেশে চলেন যান। প্রয়াত এই অভিনেত্রীর মতো অভিনয় জগতে নাম লিখিয়েছেন তার মেয়ে জানভি কাপুরও।
ববিতা-কারিশমা-কারিনা
বলিউডের স্বার্থক মা বলায় যায় একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ববিতাকে। সত্তর আশির দশকের সফল অভিনেত্রীও তিনি। তিনি ১৯৭১ সালে রণধীন কাপুরকে বিয়ে করেন। তাদের ঘর আলো করে আসে কারিশমা কাপুর এবং কারিনা কাপুর। দু’জনই বলিউডের প্রতিষ্ঠিত অভিনেত্রী।
অপর্ণা সেন ও কঙ্কনা সেন
মিষ্টি হাসি এবং পাগল করা চোখের চাহনি মা-মেয়ে দু’জনের মধ্যেই রয়েছে। মা অপর্ণা সেন পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার আগে কলকাতার একজন নামী অভিনেত্রীও ছিলেন। অপরদিকে মেয়ে কঙ্কনা সেন বলিউডে নিজের যোগ্যতা দেখিয়েছেন বারংবার। চ্যালেঞ্জিং যে কোনো চরিত্রে তিনি মানিয়ে যান। মা মেয়ে দু’জনই সমানতালে জনপ্রিয়তা কেড়ে নিতে সক্ষম হন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org