দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যারা বাতের ব্যথায় ভোগেন তারা নিজের বুদ্ধিতে ব্যথার ওষুধ না খেয়ে সেবন করেন আদা। এতেই সমস্যাকে কাবু করে ফেলতে পারবেন।
বর্তমান সময়ে বাতের ব্যথায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নেহাত কম নয়। বয়স মাত্র ৩০ পেরোলে এই সমস্যার ফাঁদে পড়ছেন অনেকেই। এরপর একটু হাঁটাচলা করতেও তখন বেগ পেতে হয়। সে কারণে এই রোগে ভুক্তভোগীদের অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মিত খেয়ে যাচ্ছেন পেইনকিলার। এই পেইনকিলার শরীরের বারোটা বাজাচ্ছে। বিপদে পড়ছে কিডনি এবং লিভারের মতো অঙ্গগুলো। তাই ভুলেও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ওষুধ কখনও খাবেন না। এর পরিবর্তে ভরসা রাখতে পারে আদার মতো একটি উপকারী ভেষজের উপর। এতেই হাতেনাতে পাওয়া যাবে উপকার।
ভাবছেন, ঠিক কীভাবে বাতের ব্যথা কমায় এই আদা?
বাতের ব্যথা কমবে
আদা অর্থাৎ এই ভেষজে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিইনফ্লামেটরি উপাদানের ভাণ্ডার। যে কারণে আদা খেলে কমে ব্যথা-বেদনা। সেইসঙ্গে এই ভেষজে কিছুটা পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন বি৬, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, কপারের মতো ভিটামিন এবং খনিজও রয়েছে। এই সমস্ত উপাদান জয়েন্ট ও নার্ভের ব্যথা কিছুটা হলেও কমাতে সক্ষম। তাই এই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা নিয়মিত আদা সেবন করতেই পারেন!
এটি কোন আর্থ্রাইটিসে কার্যকরী?
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অস্টিওআর্থ্রাইটিস ও রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সমস্যায় দারুণভাবে কাজ করে এই ভেষজ। তাই এই দুই সমস্যায় ভুক্তভোগীরা নিয়মিতভাবে আদা সেবন করতে পারেন। এইক্ষেত্রে প্রতিদিন একটা ছোট সাইজের আদার টুকরা চিবিয়ে কিংবা পানি দিয়ে গিলে নিন। তাতে উপকার পাবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
গ্যাস ও অ্যাসিডিটির দাওয়াই
আপনি কী প্রতিদিন গ্যাস ওঅ্যাসিডিটিতে ভোগেন? সেই ক্ষেত্রে প্রত্যহ সেবন করতে পারেন আদা। কারণ হলো, এই ভেষজে উপস্থিত কিছু উপাদান অন্ত্র ও পাকস্থলীর হাল ফেরাতে পারে। যার জন্য বাড়ে হজমশক্তিও। যে কারণে গ্যাস ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা নিপাত যায়। শুধু তা-ই নয়, নিয়মিত আদা সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে সেরে ওঠা যায় বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তাই এই সমস্যায় ভুক্তোভোগীরা নিয়মিতভাবে আদা সেবন করতে ভুলবেন না!
ইমিউনিটি বাড়বে
আমাদের শরীরকে নানা ধরনের সংক্রামক ব্যাধি হতে বাঁচাতে পারে ইমিউনিটি। তাই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখতে হবে। সেই কাজেও আপনাকে সাহায্য করতে পারে এই আদা। কারণ হলো, এতে উপস্থিত কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরাসরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরেও কাজ করে। তাই নিয়মিতভাবে আদা খেলে ছোটখাট সংক্রামক অসুখ শরীরের কাছে আর ঘেঁষতে পারে না। উল্টো উপকারই পাওয়া যায়। তাই আপনার প্রতিদিনের ডায়েটে অবশ্যই আদাকে রাখুন।
দূরে থাকবে ক্যান্সার
আমরা সবাই জানি ক্যান্সার অত্যন্ত জটিল একটি অসুখ। এই রোগটি পিছু নিলে ঘোর বিপদ। তবে ভালো খবর হচ্ছে, নিয়মিত আদা সেবন করলে এই অসুখ থেকে কিছুটা হলেও দূরত্ব বাড়িয়ে নিতে পারেন। কারণ হলো, এতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভাণ্ডার যা ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধিও আটকে দেয়। তাই ঝটপট এই ভেষজটি সেবন করতেই পারেন!
তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org