দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আপনি এতোই ব্যস্ত যে অফিসের কাজের চাপে সন্তানকে সময়ও দিতে পারেন না। ধীরে ধীরে তার থেকে বাড়ছে দূরত্বও। এমন সমস্যার সমাধানে কী করবেন? আজ জেনে নিন সেই বিষয়টি।
আপনার সন্তানকে সময় না দিলে তার থেকে দূরত্ব বাড়বে সেটিই কিন্তু স্বাভাবিক। তবে ইদানিং অধিকাংশ বাবা-মা দু’জনেই কর্মরত হওয়ায় সন্তানের জন্য পৃথক করে সময় বের করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে। যার জন্য বাচ্চার থেকে অভিভাবকের দূরত্ব বাড়ছে। তাই পরিস্থিতি এতোটা জটিল দিকে যাওয়ার পূর্বেই আপনাকে সাবধান হতে হবে। সেই ক্ষেত্রে যতোই কর্ম ব্যস্ততা থাকুক না কেনো, সন্তানকে সময় দেওয়াটা জরুরি।
আপনি জিজ্ঞেস করতে পারেন, দিনের অধিকাংশ সময়ই কিন্তু অফিসেই কেটে যায়, সেই ক্ষেত্রে বাচ্চাকে সময় দেবেন কীভাবে? সেই উত্তরটা আজ দেওয়া হচ্ছে এই নিবন্ধে।
অফিসের কাজ দ্রুত সেরে ফেলুন
আমাদের মধ্যে অনেকেই অফিসটাকেই যেনো বাড়ি বানিয়ে ফেলেন। তাই তারা সারাদিন অফিসেই কাটান। এরপর রাতে বিধ্বস্ত হয়ে ফিরেই ঘুমাতে চলে যান। তাতে বাচ্চার জন্য পৃথক করে সময় বের করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। তাই সবার আগে আপনাকে অফিসের রুটিন ঠিকঠাক সাজিয়ে নিতে হবে। সেই রুটিন মেনে দ্রুতই কাজ করুন। তাহলে বিকেলের মধ্যে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে আসতে পারবেন। এরপর সন্তানকে যতো খুশি সময় দিতে পারবেন।
অফিসের কোনো কাজ বাড়িতে নয়
আপনি কী প্রতিদিন অফিসের কাজ বাড়িতে নিয়ে আসেন? উত্তর হ্যাঁ হলে কিন্তু বড় বিপদ! কারণ আপনার এই বদভ্যাসের জন্যই কিন্তু আপনার বাচ্চাকে সময় দিতে পারছেন না। তাই এখন থেকে অফিসের কাজ বাড়ি বয়ে আনবেন না কখনও। বরং কাজের বোঝা অফিসেই নামিয়ে ফেলুন। বাড়িতে শুধু সন্তানকেই সময় দিন। ওরসঙ্গে গল্প গুজবে মেতে থাকুন। আশা করছি যে, আপনি শুধু এই নিয়মটি মেনে চললেই পরিস্থিতি হাতের মুঠোয় নিয়ে আসতে পারবেন।
বাড়িতে ফিরে কখনও মোবাইল নয়
অফিসের কাজে সারাদিন ব্যস্ত থাকার কারণে অনেকেই বাড়ি এসেই মোবাইল নিয়ে বসেন। তারপর দীর্ঘক্ষণ ধরে চলে ইনস্টাগ্রাম- ফেসবুক। কেও কেও আবার ওয়েব সিরিজ চালিয়ে সময়ও কাটান। তাই বাচ্চাকে সময় দেন না। এই ভুলটা করেন বলেই দূরত্ব বাড়ে। তাই অফিস হতে ফেরার পর সন্তানকে যতোটা সম্ভব সময় দিন। তাকে পড়াতেও পারেন, তার সঙ্গে খেলতেও পারেন বা তাকে নিয়ে পার্কেও যেতে পারেন। তাতে পরিস্থিতি চলে আসবে হাতের নাগালে।
খাবার টেবিলে একসঙ্গে যান
দিনে সময় পান আর না পান, রাতে ফেরার পর পরিবারের সকলে মিলে একসঙ্গে খেতে বসতে হবে। এই সময় সারাদিনের ঘটনাপ্রবাহ একে অপরকে বলতে হবে। ভালোর পাশাপাশি খারাপগুলো কী ঘটেছে, সেটিও জানান। তাহলে দেখবেন ধীরে ধীরে সন্তানও আপনার সঙ্গে তার মনের অন্দরের কথা ভাগ করে নিতে পারবে। এতে করে আপনাদের মধ্যে দূরত্ব কমে যাবে।
উইকএন্ডে ঘুরতে যেতে হবে
পুরো সপ্তাহ তো রুদ্ধশ্বাস গতিতেই কেটে যায়। এমন পরিস্থিতিতে বাচ্চাকে সময় দেওয়া কঠিন হতেই পারে। তাই চেষ্টা করুন গোটা সপ্তাহ সময় না পেলেও ছুটির দিনটা তার সঙ্গেই কাটানোর। এ দিন তাকে নিয়ে বেরও হতে পারেন। তার সঙ্গে বাড়িতে খেলাধুলায় মেতে থাকতে পারেন। তাহলে দেখবেন সন্তানের থেকে আপনার দূরত্বও কমবে। আপনি তার কাছাকাছি চলে আসতে পারবেন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org