দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জুতো কেমন হওয়া উচিত? সেটি হয়তো অনেকের জানা নেই। আর তাইতো পায়ের জন্য দাম দিয়ে ভালো মানের জুতো কেনার পরামর্শ দিলেও হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর জুতো কেমন হওয়া দরকার সেই বিষয়ে খুব একটা আমল দেন না অনেকেই। বরং যে চপ্পল পরে বাজারে যান, সেই চপ্পল পায়ে গলিয়েই ছাদে দু’পাক হেঁটে আসেন।
জুতো তো জুতোই নাকি!
জুতোর স্থান পায়ের তলায়- সেটি আমাদের সকলের জানা। তবে তার উপর যে গোটা শরীরের ভিত দাঁড়িয়ে রয়েছে- সেই কথা হয়তো অনেকেই মানতেই চান না। পায়ের জন্য বেশি দাম দিয়ে ভালো মানের জুতো কেনার পরামর্শ দিলেও সেই বিষয়ে আমলই দেন না অনেকেই। বরং যে চপ্পল পরে বাজার-হাটে যান, সেটি পায়ে গলিয়েই ছাদে দু’পাক হেঁটে আসেন দিব্যি। আবার, পাহাড়ে চড়ার জন্য শখ করে কেনা স্নিকার্স পায়ে গলিয়েই জিমে চলে যান অনেকেই! জুতোর রং, নকশা কিংবা পোশাকের সঙ্গেও তা মানানসই হচ্ছে কি-না, সেই সব দেখেই জুতো কেনেন সাধারণ মানুষ। সেই পাদুকা কোন কাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে সেই কথা মাথায় রেখে জুতো কেনা কিংবা পরার কথা সাধারণত মাথাতেই থাকে না। যেমন পেশায় একজন তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী, বছর তিরিশের সৌগতর বক্তব্য হলো, “রণে-বনে-জলে-জঙ্গলে সর্বত্রই আমি ‘কিটো’ জুতো পরে যাই। কারণ স্নিকার্সের মতো পা-বন্ধ জুতো পরলে পায়ের পাতা ঘেমে যায়।”
হাঁটা কিংবা দৌড়ানো, কাজে বিপুল ফারাক না থাকলেও জুতোর ক্ষেত্রে কিন্তু রয়েছে। দেখতে এক রকম হলেও ‘রানিং’ ও ‘ওয়াকিং’— এই দু’ধরনের জুতোই কিন্তু এক নয়। খালি চোখে বোঝা না গেলেও পায়ে জুতো গলালে তা টেরও পাওয়া যায়। দৌড়ানোর জুতো কিংবা ‘রানিং শু’ পায়ে গলিয়ে পার্কে এক চক্কর হাঁটা গেলেও হাঁটার জন্য তৈরি জুতো পরে দৌডাংনো যায় না। হাঁটা বা দৌড়ানোর ক্ষেত্রে একই রকমভাবে পদচালনা করা হয় না। দেহের ভরও একভাবে পায়ের উপর পড়ে না। তাই কাজের ধরন এক রকম হলেও পায়ের পাতা বা পেশির উপর আলাদা রকমভাবে চাপও ফেলে। তাই জুতো কেনার আগে কয়েকটি বিষয় জেনে নেওয়াটা খুবই জরুরি।
জুতোর মধ্যে ফারাক কোথায়?
কুশনিং
‘ওয়াকিং’ বা ‘রানিং’ জুতোর মধ্যে ডিজ়াইন কিংবা নকশাগত পার্থক্য খুব একটা না থাকলেও, গঠনগত তফাত রয়েছে। যেমন জুতোর মধ্যে, অর্থাৎ পায়ের পাতা রাখার জায়গাতে যে, ‘কুশনিং’ থাকে, তা হাঁটা কিংবা দৌডাংনোর ক্ষেত্রে একেবারেই পৃথক হয়। দৌড়ানোর সময় পায়ের তলায়, বিশেষ করে গোড়ালি কিংবা পায়ের পাতার সামনের দিকে আলাদা করে যে ‘সাপোর্ট’ কিংবা ভর প্রয়োজন পড়ে, হাঁটার ক্ষেত্রে তা প্রয়োজনও পড়ে না।
জুতোর হিল
বাইরে থেকে দু’ধরনের জুতোর হিলের উচ্চতা দেখলে পৃথক করে বোঝার উপায়ও থাকে না। তবে দৌড়ানোর জন্য যে ধরনের জুতো পাওয়া যায়, তাতে সাধারণত হিলের অংশটি বেশ উঁচুও হয়। তুলনায় কম উঁচু হিল থাকে ওয়াকিং শু’তে। যে কারণে হাঁটাচলা করতেও বেশ সুবিধা হয়।
নমনীয়তা
পায়ের ক্ষতি রুখতে হলে জুতোর গঠন যেমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, ঠিক তেমনি প্রয়োজনীয় বিষয় হলো তার নমনীয়তা। সাধারণ দৌড়ানোর জন্য যে ধরনের জুতো পাওয়া যায়, সেগুলো বেশি ‘ফ্লেক্সিবল’ হয়ে থাকে। হাঁটার জন্য যে ধরনের জুতো পাওয়া যাবে, সেগুলো তুলনামূলক একটু কম নমনীয়। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org