দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বভাব-সুলভ জীবন-যাপনের বাইরে যখন গল্প নির্মিত হয় তখনই দর্শকরা আনন্দ পায়। তেমনি ব্যতিক্রমী ধাঁচের গল্প নিয়েই অর্পনা রানী রাজবংশীর রচনা ও নাজনীন হাসান খানের পরিচালনায় নির্মিত হলো ‘মি. পারফিউম’ নামে নাটকটি।
গল্প সম্পর্কে পরিচালক নাজনীন হাসান খান বলেন, ‘এটি খুবই ভিন্ন ধাঁচের একটি গল্প। গতানুগতিক প্রেম-বিলাসীর বাইরে পারিবারিক যোগসূত্রে নির্মিত হয়েছে এই নাটকটি। সামাজিক প্রেক্ষাপটগুলো এমন যে, গল্পে সে ধরনের বিষয়ভিত্তিক এবং যৌক্তিকতার নিরিখেই আবেদনগুলো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি মাত্র।’
এই বিষয়ে অর্পনা রানী রাজবংশী বলেছেন, ‘অতীতের ন্যায় সব সময়ই আমি চেষ্টা করেছি গল্পে নতুনত্ব আনার। এবারের প্রচেষ্টাও তেমনই অংশ। দর্শকের ভালো লাগাই আমার ভালো লাগা। একজন লেখকের নিজস্ব স্বকীয়তার পরিচয় তো তখনই ফুটে ওঠে, যখন দর্শকের মননশীলতায় হৃদয়াঙ্গম করা সম্ভব হয়।’
গল্পে দেখা যাবে- জামাল পানিকে প্রচণ্ডভাবে ভয় পায়। সেইজন্য সে গোসল করতেও ভয় পায়। নিয়মিত গোসল না করার কারণে তার শরীর দিয়ে বিদঘুটে গন্ধ বের হতে থাকে। সেজন্য কোনো মানুষ তার সঙ্গে চলাফেরা করে না। কোথাও গেলে তার পাশে থাকা মানুষগুলো সরে যায়। এইসব বিষয়ের দিকে কর্ণপাত করার বিন্দুমাত্র সময়ই তার নেই। গোসল করা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে প্রতিনিয়ত ঝগড়াও হয়।
জামালকে দেখলে বলা যায়, গ্রামের মানুষ একপ্রকার দৌড়ে পালায়। জামাল চায়ের দোকানে গিয়ে বসলে দোকানদারও তাকে চলে যেতে বলে। কারণ হলো দীর্ঘ সময় সে দোকানে বসে থাকলে কোনো কাস্টমারই আসবে না। এই নিয়ে দোকানদারের সঙ্গে তুলকালাম কাণ্ড বেধে যায়। জামাল পারে না, সে দোকানদারকেই মারতে যায়।
এমন অবস্থায় একদিন জামালের স্ত্রী রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে যায়। এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে সেও শ্বশুর বাড়িতে চলে যায়। জামালের স্ত্রী রিপা জামালের বাড়ি ফিরে যেতে বলে। সে তার সঙ্গে সংসার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জামাল কি করবে তা বুঝতে পারে না। মেয়েকে মাথা ঠাণ্ডা করার কথা বলেন রিপার মা।
তবে সামনে কি ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে সেটি জামাল বুঝতেও পারে না। তার ভায়রা ভাই তাকে সুকৌশলে একদিন নদীর পাড়ে নিয়ে নদীতে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন জামাল, এই রকম পরিস্থিতি দেখে হতভম্ম হয়ে যায় উপস্থিত সকলেই। সবাই মিলে জোরপূর্বক যখন জামালকে গোসল করিয়ে দেয় তখন সে বুঝতে পারে আসলে পানিতে গোসল করার আসলে কি মজা। তার এতদিন পর শরীরকে বাতাসের মতো হালকা অনুভূত হয়। এভাবে এগিয়ে যায় গল্পের প্রতিটি চরিত্রই।
এই নাটকটিতে অভিনয় করেছেন- আখম হাসান, রেজমিন সেতু, শফিক খান দিলু, ফরিদ হোসাইন, রেশমা আহমেদ, ইশরাত জাহান প্রমুখ।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org